shono
Advertisement

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ‘কলার ধরা’র হুমকির অডিও ভাইরাল, অভিযুক্ত TMCP

'আজকে দাঁড়িয়ে জুটার কোন লোকের কলার ধরতে হবে, সঞ্জীব প্রামাণিক ধরে দেবে।' শোনা গিয়েছে অডিও ক্লিপে।
Posted: 08:05 PM Apr 18, 2022Updated: 08:05 PM Apr 18, 2022

দীপঙ্কর মণ্ডল: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বৈঠকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম শিক্ষক সংগঠনের প্রতি অশ্রদ্ধা সূচক বক্তব্য। সোমবার সেই অডিও ক্লিপ সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) টিএমসিপি ইউনিটের সভাপতি সঞ্জীব প্রামাণিক একটি ঘরোয়া সভায় বলেছেন, “আমি কাউকে আমার বিষয়ে কিছু বলি না। যারা এই মিটিংয়ে প্রেজেন্ট আছো তারা খুব কম জনই জানো আমার অওকাত সম্পর্কে। আজকে দাঁড়িয়ে জুটার কোন লোকের কলার ধরতে হবে, সঞ্জীব প্রামাণিক ধরে দেবে। কিন্তু বাকি কেউ পারবে না।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “অডিও ক্লিপটি আমি শুনেছি। ঘটনাটি যদি সত্যিই হয়ে থাকে সেটা দুর্ভাগ্যজনক। এ ধরনের ঘটনা কখনও কাম্য নয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই সংস্কৃতি মানানসই নয়। অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করে কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ করবে।”

Advertisement

উল্লেখ্য, যাদবপুর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন বা জুটা একটি বামপন্থী সংগঠন। এই সংগঠনের সঙ্গে টিএমসিপি মতাদর্শগতভাবে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে। জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় এদিন বলেন, “অডিওতে শোনা যাচ্ছে যাদবপুরের শিক্ষকদের হুমকি দিচ্ছে টিএমসিপি নেতা। এতে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক খারাপ হবে। অন্য প্রতিষ্ঠানেও এমন চলছে। এমন শক্তির বিরুদ্ধে জুটা লড়বে।” এসএফআইয়ের এক ছাত্র নেতা কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক তথা টিএমসিপি ইউনিট সভাপতিকে ছুটিয়ে এবং পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছিলেন। থানায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও ফল পায়নি টিএমসিপি। উপাচার্যর ঘরের সামনে টানা ১০ দিন অবস্থানে বসেও শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে।

[আরও পড়ুন: রাজ্যে সাড়ে ১১ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ, প্রচুর কর্মসংস্থানের ঘোষণা নবান্নর]

এদিন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিও নিয়ে মাঠে নামে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই ইউনিট বিবৃতি দিয়ে জানায়, “আগেও টিএমসিপি নেতারা শিক্ষকদের হেনস্তা করেছেন। যাদবপুরে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে কলার ধরার সম্পর্ক নেই। তৃণমূল এখানে শিক্ষকদের কলার ধরতে চায়। তৃণমূল ছাত্রনেতার যথাযথ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

কোন জায়গায় কবে এমন বক্তব্য রেখেছেন, তা মনে করতে পারছেন না তৃণমূল ছাত্রনেতা সঞ্জীব। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং আমি নিজে প্রকাশ্যে এ ধরনের কোনও মন্তব্য সমর্থন করি না। কোন প্রসঙ্গে কথাগুলি বলা হয়েছে তা আগে দেখতে হবে। আমি রূপকার্থে এমন কথা বলে থাকতে পারি।” টিএমসিপি ইউনিট সভাপতির সংযোজন, “আমি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১২ বছর ধরে রয়েছি। টিএমসিপিকে সমর্থন করা যেন এখানে অপরাধ। এখানে আমাদের সঙ্গে তীব্র বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। বাম শিক্ষকরা ফেলও করিয়ে দেন। উচ্চশিক্ষায় আমাদের বঞ্চিত করা হয়। ক্লাসে একঘরে করে রাখার চেষ্টা হয়। বাম ছাত্র এবং শিক্ষক সংগঠন আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটায়।” যাদবপুরের পড়ুয়াদের বক্তব্য, অডিওটি শুনেই বোঝা যাচ্ছে পরিকল্পিতভাবে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বক্তব্যে জুটা প্রসঙ্গের আগে এবং পরের ভয়েস কেটে এডিট করা হয়েছে। সঞ্জীবের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, স্নাতকে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর সমস্ত ছাত্র সংগঠন নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে। নতুনদেরও ডাকা হয়। সেই ধরনের কোনও সভায় ওই বক্তব্য রাখা হতে পারে বলে মনে করছেন পড়ুয়ারা। ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ভাইরাল অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি।

[আরও পড়ুন: চলতি মাসেই অবসর নারাভানের, ঘোষিত দেশের নয়া সেনাপ্রধানের নাম]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement