সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৈঠক, পালটা বৈঠকে কাটল না টলিপাড়ার অচলাবস্থা। ফলে কবে থেকে শুটিং শুরু হবে, তার উত্তর মিলল না। কাল অর্থাৎ মঙ্গলবারও কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক ও প্রযোজকরা। ফেডারেশনের সঙ্গে সমস্যা মেটাতে এদিন দুপুরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে একদফা বৈঠক হয় পরিচালক ও প্রযোজকদের। তার পরই পালটা সংবাদ সম্মেলনে পরিচালকদেরই কাঠগড়ায় তোলে ফেডারেশন। সংগঠনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ষড়যন্ত্র করে শুটিং বন্ধ রাখা হয়েছে। কলাকুশলীরা কাজ বন্ধ করেনি। এই প্রেক্ষাপটে আজ রাত সাড়ে নটা নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করে পরিচালকরা 'নিরপেক্ষ' তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা কাজ বন্ধের পক্ষে নয়। তাঁরা কাজ বন্ধ করেননি। চাপ দিয়ে কাজ বন্ধ করানো হয়েছে।
এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন অঞ্জন দত্ত। তিনি জানান, "আমরা তো সিনেমা করি। তাই যে সিনেমা বোঝে। নিরপেক্ষ। আইন বোঝে। এমন কাউকে এই তৃতীয় পক্ষ করা উচিত।" এই তালিকায় কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, আমলাও থাকতে পারেন বলে মত পরিচালকদের। কাজ বন্ধ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পরিচালক-অভিনেতা অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমি অ্যালিগোরিকালি বলছি। এতোদিন আমাদের জ্বর হলে দোকান থেকে টপ করে ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলতাম। এবার আমার একটা ডাক্তার চাইছি। প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিকের একটা লম্বা কোর্স করতে চাইছি।" তাঁদের সাফ কথা, বিষয়টা আর একজনের অপমানের উপর দাড়িয়ে নেই। এতদিনে চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টিও যুক্ত হয়ে গিয়েছে। কাজ বন্ধ না রাখা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের উল্লেখ করেছিল ফেডারেশন। এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, "আমরা কাজ বন্ধ রাখছি না। আমরা কাজ বন্ধ করিনি। এখন মুখ্যমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে আমরা কাজ বন্ধ রাখছি বোঝানো হলে, তা সম্পূর্ণ ভুল হবে। আমাদের ফ্লোরে না ঢুকে কাজ বন্ধ করানো হয়েছে।"
[আরও পড়ুন: ‘গাড়িতে ওঠার পর প্যান্টের চেন খুলে দেয়…’ শ্লীলতাহানির শিকার অভিনেত্রী তিলোত্তমা]
রাহুল মুখোপাধ্যায়ের (Rahool Mukherjee) উপর নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে টালমাটাল টলিপাড়া। সপ্তাহের প্রথমদিন স্তব্ধ টলিউড। সোমবার দুপুরেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে মিটিং করেন টলিউডের তাবড় পরিচালক, প্রযোজক এবং অভিনেতারা। টলিপাড়ায় এই অচলায়তন পরিস্থিতির জন্য নিয়মের বেড়াজালকেই দায়ী করেছেন তাঁরা। তাঁদের বিশ্বাস, সিনে-ইন্ডাস্ট্রি একটা পরিবার। এই দ্বন্দ্বকে ‘টেকনিশিয়ান বনাম পরিচালক’ সংঘাতের তকমা দিতে যখন নারাজ তাঁরা, তখন ফেডারেশনের কাঠগড়ায় ডিরেক্টর্স গিল্ড সাংবাদিক সম্মেলন করে। “ষড়যন্ত্র করে শুটিং বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মবিরতি ডেকে পরিচালকরা প্রথাভঙ্গ করেছেন, এরপর যদি পালটা আমরা এহেন কোনও পদক্ষেপ নিই, তাহলে দোষারোপ করবেন না”, সাফ জানান ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। সোমবার স্তব্ধ স্টুডিওপাড়ার দায় তাঁরা চাপালেন পরিচালকদের উপরই। ফেডারেশনের তরফ থেকে জানানো হল, “কলাকুশলীরা কাজ বন্ধ রাখেনি। রবিবার গোটা রাত এবং সোমবার বেলা পর্যন্ত কোথাও কোথাও শুটিং হয়েছে। যে টেকনিশিয়ানরা করেছেন, তাঁরাও আজকের ফেডারেশনের বৈঠকে রয়েছেন।” তার পর রাতে আবার বৈঠক করেন পরিচালকরা। সেখানে তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, কাল অর্থাৎ মঙ্গলবারও কর্মবিরতি চলবে। এমন পরিস্থিতিতে পরিচালক ও প্রযোজকদের পাশে দাঁড়িয়েছে সিনে ভিডিও অ্যান্ড স্টেজ সাপ্লায়ারস ওয়েলফেয়ার অ্য়াসোসিয়েশন। এদিকে সমস্যা মেটাতে মধ্যস্থতা করতে রাজি হয়েছে আর্টিস্ট ফোরাম। ইম্পার দাবি শুটিং শুরু হোক।
কবে এই সমস্যার সমাধান হয়, কবে থেকে ফের স্টুডিওপাড়াতে রোল-ক্যামেরা-অ্যাকশন শোনা যায়, তার দিকেই তাকিয়ে রূপালি পর্দার সঙ্গে জড়িত সকলেই।