সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের ‘বহুমুখী’ ভ্যাকসিন নীতিকে অনেক আগেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা। রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে, কংগ্রেস (Congress), তৃণমূল থেকে শুরু করে অন্যান্য বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলি টিকাকরণের একেবারে গোড়ার দিক থেকেই বলে আসছিল। অবশেষে, সোমবার বিরোধীদের সেই দাবি পূরণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছেন, আগামী ২১ জুন থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে বিনামূল্যে করোনার ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) দেবে কেন্দ্র। মোট উৎপাদিত ভ্যাকসিনের ৭৫ শতাংশ সরাসরি কিনে নিয়ে তা রাজ্যগুলির মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ এবং উপযোগী। বিরোধীরা বলছে, “দের আয়ে, দুরুস্ত আয়ে…অনেক আগেই এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা উচিত ছিল কেন্দ্রের।” তৃণমূল আবার বলছে, এখনও আসল সমস্যার কোনও সমাধানই করলেন না প্রধানমন্ত্রী।
মোদির ঘোষণার পরই তাঁর সিদ্ধান্তকে একযোগে স্বাগত জানাচ্ছেন বিজেপি (BJP) শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা। মনোহরলাল খাট্টার, শিবরাজ সিং চৌহান থেকে শুরু করে কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত সকলেরই বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং সাধুবাদযোগ্য। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তো বটেই রাজনাথ সিংয়ের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও টুইট করে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। জোটসঙ্গী জেডিইউ (JDU) নেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও সুর মিলিয়েছেন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেই।
[আরও পড়ুন: ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে কেন্দ্র, বড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর]
বিরোধী শিবিরের অনেকেও মোদির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে খোঁচা দিতেও ছাড়ছেন না। মোদির ঘোষণা প্রসঙ্গে কংগ্রেস শাসিত ছত্তিশগড়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিএস সিং দেওয়ের (TS Singh Deo) বক্তব্য, “এই সিদ্ধান্ত ৬ মাস আগেই নেওয়া উচিত ছিল। তবে, দেরিতে হলেও এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।” কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতা জয়রাম রমেশ বলছেন,”প্রধানমন্ত্রী বড্ড দেরি করে ফেললেন। বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করে আগে এই সিদ্ধান্ত নিলে কোনও ক্ষতি হত না।” কেরলের মুখ্যমন্ত্রী তথা বাম নেতা পিনারাই বিজয়ন দ্ব্যর্থহীন ভাষাতেই মোদির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “এটা এই সময়ের সবচেয়ে জরুরি সিদ্ধান্ত।” আম আদমি পার্টি বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নেননি। সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কারের পর এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলছেন,”মোদির ঘোষণায় সবই হল, আসল সমস্যাই মিটল না। এখন মূল সমস্যা হল টিকার অভাব। রাজ্য টাকা দিয়ে কিনতে চেয়েও ভ্যাকসিন পাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী যদি বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘোষণার সঙ্গে বলে দিতেন, রাজ্যগুলি চাহিদা অনুযায়ী টিকা পাবে, তাহলে অর্ধেক সমস্যা মিটে যাবে।”