সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামনেই বাংলা নতুন বছর। তার আগে চড়ক, শনিবার ও রবিবার মিলিয়ে বেশ কয়েকদিন হাতে সময় থাকছে। এই সময়টা আপামর বাঙালি যেমন পয়লা বৈশাখ মেতে ওঠেন, তেমনি কেউ কেউ ছুটিতে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ার প্ল্যানও করেছেন। চৈত্রের শেষ আর বৈশাখের শুরুতে চাঁদিফাটা গরমে পুড়ছে সকলেই। তার মধ্যে একটু ঠান্ডার আমেজ পেলে মন্দ হয় না। তাই যাঁরা হাতেগোনা ছুটিতে রোজকার একঘেয়েমি কাটাতে বেরিয়ে পড়তে চান তাদের জন্য রইল কয়েকটি বেড়ানোর ডেস্টিনেশনের হদিশ। চলে যেতে পারেন দার্জিলিং, মুসৌরি, মানালি, সোনমার্গ, ত্রিবান্দম, কুন্নুরের মতো জায়গায়।
দার্জিলিং- বাঙালির চিরচেনা দার্জিলিং বরাবরই বেড়াতে যাওয়ার জন্য হট ফেভারিট ডেস্টিনেশন। ইদানীং সারাবছরই এই শৈলশহরে মানুষ বেড়াতে যান। তবে এপ্রিলে ভিড় কিছুটা হলেও বেশি থাকে। কারণ এপ্রিলে দার্জিলিংয়ের আবহাওয়া খুবই মনোরম থাকে। ইউনেসকোর এই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে ৭৮ কিমি লম্বা দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে, টাইগার হিল, চা বাগান ,ম্যাল, চিড়িয়াখানা, মনেস্ট্রি। এছাড়া টয়ট্রেনে চেপে ঘুরে দেখতে পারেন বাতাসিয়া লুপ। পাশাপাশি কালিম্পং,কার্শিয়াং, মিরিকও ঘুরে নিতে পারেন একই যাত্রায়। ট্রেনে,বাসে ও বিমানে পৌঁছে যেতে পারেন নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন বা বাগডোগরা এয়ারপোর্ট। সেখান থেকে গাড়ি বা বাসে পৌঁছে যেতে পারেন দার্জিলিং।
মানালি- হিমাচল প্রদেশের শৈলশহর মানালি বরাবরই ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম পছন্দের স্থান। বিশেষত 'ভ্যালি অফ গড' কুলু শহরটি তো ট্যুরিস্টদের খুবই পছন্দের জায়গা। এপ্রিলে বেড়াতে যাওয়ার জন্য আপনি মানালিকে বেছে নিতেই পারেন। এখানে তিব্বতি মনেস্ট্র, একাধিক গুম্পা, হিড়িম্বা দেবীর মন্দির, বশিষ্ঠ মন্দির-সহ একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। রক ক্লাইম্বিংয়ের মতো একাধিক অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসেরও ব্যবস্থা রয়েছে। দিল্লি ও চণ্ডিগড় বিমানবন্দর থেকে মানালি যাওয়া যায়। এছাড়া চণ্ডীগড়, আম্বালা, যোগিন্দর নগর রেলস্টেশন থেকেও গাড়ি করে চলে যাওয়া যায় মানালি।
মুসৌরি- উত্তরাখণ্ডের এই শৈলশহর মুসৌরি দেরাদুন থেকে মাত্র ৩৫ কিমি দূরে অবস্থিত। ৬১৭০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত এই শৈলশহরে পর্যটকরা যান সেখানকার প্রকৃতির টানে। হরেক প্রকৃতির গাছের সঙ্গে রংবাহারি ফুলের সম্ভারে আর রোডোডেন্ড্রনের শোভায় সজ্জিত এই শৈলশহর। কেম্পটি ফলস, মুসৌরি লেক সহ একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে এখানে। ঘুরে নিতে পারেন দেরাদুন ও ধানৌল্টি। মুসৌরি পৌঁছানোর জন্য নিকটবর্তী বিমানবন্দর দেরাদুনের জলি গ্রাণ্ট এয়ারপোর্ট রয়েছে। এছাড়া দেরাদুন রেলওয়ে স্টেশন থেকেও পৌঁছে যেতে পারেন মুসৌরি।
কুন্নুর- নীলগিরি পর্বতের বুকে তামিলনাড়ুর অন্যতম হিলস্টেশন কুন্নুর। এপ্রিলে এখানকার আবহাওয়া অত্যন্ত মনোরম থাকে। ঘন মেঘের আস্তরণ, সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, মৃদুমন্দ হিমেল বাতাস আপনার মন ভরাবেই। নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ের টয়ট্রেনে চেপে প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে কুন্নুর কিংবা উটি পৌঁছানোর মজাই আলাদা। এর পাশাপাশি একাধিক জলপ্রপাত, লেক, গার্ডেন সহ একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তবে এই শৈলশহরে বেড়াতে গেলে বাড়তি পাওনা হবে কফি, প্রক্রিয়াজাত চকোলেট, ইন্ডিয়ান বেকারি ,হাই ফিল্ড টি ফ্যাক্টরির চা। তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর বিমানবন্দর থেকে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় কুন্নুর। এছাড়া রয়েছে নিকটবর্তী রেলস্টেশন কোয়েম্বাটুর জংশন ও মেট্টুপালায়াম স্টেশন।
পেরিয়ার বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য- কেরলের পেরিয়ার নদীর ধারে রয়েছে এই পেরিয়ার বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখতে হলে আপনিও পৌঁছে যেতে পারেন এই অভয়ারণ্যে। তাছাড়া জঙ্গল ঘুরতে যদি ভালোবাসেন তাহলে এই এপ্রিলে চলে যেতে পারেন পেরিয়ার। দক্ষিণ ভারত হলেও কেরলের এই অংশের আবহাওয়া এপ্রিলে মনোরমই থাকে। জিপ বা হাতি সাফারিতে ঘুরে দেখতে পারেন অভয়ারণ্য। মাদুরাই ও কোচি বিমানবন্দর হয়ে চলে যেতে পারেন পেরিয়ার। ট্রেনে যেতে চাইলে মুম্বই, ব্যাঙ্গালোর, কোচি,চেন্নাই থেকে নিয়মিত ট্রেন পাবেন পেরিয়ার যাওয়ার।