shono
Advertisement

সেলুলয়েডের সিরাজদৌল্লা হয়ে ওঠার জার্নি কেমন? গল্প শোনালেন শন

ঠাকুমা সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে সম্পর্কের কথাও শেয়ার করলেন ‘আমি সিরাজের বেগম’ ধারাবাহিকের নায়ক৷ The post সেলুলয়েডের সিরাজদৌল্লা হয়ে ওঠার জার্নি কেমন? গল্প শোনালেন শন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 06:26 PM Apr 22, 2019Updated: 06:26 PM Apr 22, 2019

তিনি নতুন নায়ক। তিনি সিরাজদৌল্লা। কিন্তু তিনি যে সুপ্রিয়া দেবীরও নাতি! শন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি কোয়েল মুখোপাধ্যায়

Advertisement

আপনার নাম কি হলিউড তারকা শন কনারির থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রাখা হয়েছিল?
(হাসি) না, না। আমার দাদা নামটা দিয়েছিল। বার্থ সার্টিফিকেটেও এই নাম আছে।

আপনি সুপ্রিয়া দেবীর নাতি। এই পরিচয়টা আশীর্বাদ না বোঝা?
আমি জানি, আমি যে সুপ্রিয়া দেবীর নাতি, সেই পরিচয়টা মানুষ আমার গায়ে এঁটে দিতে পারেন। আমাকে সেই হিসাবে জাজও করতে পারেন। কিন্তু আমার চোখে এই পরিচয়টা আমার প্লাস পয়েন্ট। নেগেটিভ ফ্যাক্টর নয়। এখনও পর্যন্ত যা কিছু অ্যাচিভ করেছি, নিজের পরিশ্রমে করেছি। কারও আত্নীয় হওয়ার সুবাদে নয়। তাই এই পরিচয় নিয়ে আমার কোনও দ্বিধা বা উদ্বেগ নেই। এই পরিচয় আমার কেরিয়ারে বাধা সৃষ্টি করেনি, করবেও না। তা ছাড়া আম্মাকে কখনও আমি সেলিব্রিটি বা বিখ্যাত অভিনেত্রী হিসাবে দেখিনি। আমার কাছে সুপ্রিয়া দেবী শুধুই আমার দিদা। আমার আম্মা।

সুপ্রিয়া দেবী আপনাকে কী বলে ডাকতেন?
আমার ডাকনাম বনি। আম্মা আমাকে বনা বলে ডাকতেন।

[আরও পড়ুন: সমুদ্রতটে বিকিনি বিপ্লব, বাঙালি এখন টু-পিস প্রেমী]

আম্মার সঙ্গে কীরকম সময় কাটাতেন?
আম্মা বেঁচে থাকলে আমাকে এই ইন্ডাস্ট্রিতে দেখে খুব খুশি হতেন। আম্মার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি আছে। দিল্লি থেকে কলকাতায় আসার পর আম্মার সঙ্গে বসে প্রচুর সিনেমা দেখতাম। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি সব রকম। তবে বেশি দেখতাম ইংরেজি সিনেমা। প্রতিদিন লাঞ্চের পর আমরা একসঙ্গে বসতাম। আম্মা বলত, বনা নতুন একটা ইংরেজি সিনেমা দেখা। তাই করতাম। তার পর দু’জনে মিলে বসে চুপ করে সিনেমা দেখতাম। সেই সময় কেউ কোনও কথা বলতাম না, যতক্ষণ না ছবিটা শেষ হয়! সেই মুহূর্তগুলো খুব মিস করি।

সিনেমা শেষ হলে আম্মা কী বলতেন?
আম্মা বলত, বনা যুগটা অনেক পালটে গেছে রে। অভিনয় থেকে পরিচালনা, কোনও কিছুই আর আগের মতো নেই। এখন সব কিছু খুব সাট্‌ল। খুব রিয়েলিস্টিক। চড়া কিছু নয়। আর সেটা ভাল। আম্মা খুব প্রশংসা করতেন।

আম্মার রান্নার হাতের তো জুড়ি ছিল না! তা বনাকে তিনি কী কী রেঁধে খাওয়াতেন?
আম্মার সব রান্নার মধ্যে আমার ফেভারিট চিংড়ি মাছের মালাইকারি। মডেলিং করতাম বলে রোজ খেতে পারতাম না। কিন্তু সপ্তাহে একদিন তো খেতামই। প্রত্যেক রবিবার আম্মাকে বলতাম, মালাইকারিটা রান্না করবে।

নাতির সঙ্গে কোনও সিক্রেট শেয়ার করতেন না?
আম্মা খুব সিক্রেটিভ ছিলেন। বেশি কথা বলতেন না। আমিও অনেকটা তেমনই। তবে মাঝে মাঝে বলতেন, উত্তমকুমারকে তিনি কতটা ভালবাসতেন। আম্মার কথা শুনে মনে হত, আম্মা উত্তমকুমারকে অন্ধভাবে ভালবাসতেন। ওঁর ভালবাসাটা সত্যি ছিল। স্বচ্ছ ছিল। এরকম ভালবাসা দেখা যায় না।

[ আরও পড়ুন: টেলিভিশন থেকে সিনেমা, বলিউড জয় নিয়ে অকপট বঙ্গললনা মৌনী]

আপনি ‘আমি সিরাজের বেগম’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন। ছোটপর্দায় আপনার প্রথম কাজ। তা-ও আবার সিরাজদৌল্লার চরিত্রে।
অডিশন দিয়েছিলাম রোলটার জন্য। ভাবতে পারিনি নির্বাচিত হব। প্রথমে একটু দ্বিধায় ছিলাম, এত বড় একটা চরিত্র। এত লার্জ স্কেলে শুটিং হবে। আত্মবিশ্বাস পাচ্ছিলাম না। কিন্তু আমার বন্ধুবান্ধব, পরিবার সাহস দিল। চরিত্রটাকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছিলাম। প্রচুর হোমওয়ার্ক করেছিলাম। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম যে, সিরাজের চরিত্রটা খুব ফ্যাসিনেটিং। চরিত্রটার প্রতি তখন থেকেই উৎসাহ বেড়ে গিয়েছিল।

সিরাজদৌল্লার কাহিনি, পলাশির যুদ্ধের ইতিহাস পড়েছেন?
হ্যাঁ। তবে গল্পে, ইতিহাসে যা লেখা আছে, সেটা খুব সীমিত। তাছাড়াও আমি নবাব সম্পর্কে অনেক কথা শুনেছি। মুর্শিদাবাদ গিয়েছিলাম।নিজের উদ্যোগেই। সেখানকার স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছি। মিউজিয়াম ঘুরে দেখেছি। মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছি।

 

সিরাজের চরিত্রের জন্য কী কী প্রস্তুতি নিতে হয়েছে?
তরোয়াল চালানো, ঘোড়ায় চড়া শিখতে হয়েছে। ডিকশন নিয়ে ওয়ার্কশপ করেছি। উর্দু শব্দের সঙ্গে বাংলা মিশিয়ে কথা বলা রপ্ত করেছি।

শুনেছি ‘যোধা আকবর’-এর যেখানে শুটিং হয়েছে, ‘আমি সিরাজের বেগম’-এর প্রোমোও সেখানেই শুট করা হয়েছে?
একদমই তাই। কারজাটের কাছে এনডি স্টুডিওতে। ওখানেই হৃত্বিক রোশন শুট করেছিলেন ‘যোধা আকবর’-এর। তা ছাড়া যেহেতু ‘আমি সিরাজের বেগম’ একটা কস্টিউম ড্রামা, পিরিয়ড ড্রামা, আর এখন প্রত্যেকটা চ্যানেলেই এত পিরিয়ড ড্রামা চলছে, তাই আর পাঁচটার থেকে একে অন্য রকম করে তোলা, আরও গ্র‌্যান্ড করে তোলাটা দরকার ছিল। প্রোমো ছাড়া সিরিয়ালের বেশ কিছু দৃশ্যেরও শুটিং কারজাট এবং পুরুলিয়ায় হয়েছে।

[আরও পড়ুন: হুমায়ূন আহমেদের কাছে বিশেষভাবে ঋণী জয়া আহসান, কেন?]

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের চরিত্রে অভিনয় করে এখনও পর্যন্ত সেরা প্রশংসা কী পেয়েছেন?
দর্শকরা যে পছন্দ করছেন, বুঝতে পারি। রাস্তায় বেরোলে সকলে চিনতে পারে। ‘সিরাজ’-এর সঙ্গে সেলফি তুলতে চায়! তবে সবচেয়ে বড় প্রশংসা তখন পাই যখন দর্শকরা বলেন, আমাকে সত্যিকারের নবাবের মতো লাগে।

এরপর কী?
ছোট এবং বড়পর্দার বেশ কিছু অফার আছে। এটা আগে শেষ হোক। তারপর ভেবে দেখব।

বড়পর্দায় ‘দুর্গা সহায়’ দিয়ে কেন ডেবিউ করলেন? প্রথম ছবি, তা-ও আবার অতিথি শিল্পী হিসাবে?
টলিউডের একজন বিখ্যাত পরিচালক চরিত্রটা অফার করেছিলেন। অরিন্দম শীল। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম বড় নাম। ‘না’ বলতে পারিনি। জানি, চরিত্রটা ক্যামিও ছিল। তবুও মনে হয়েছিল, আমার কেরিয়ারের জন্য ভাল স্টার্ট হবে।

আপনি তো মডেলিং থেকে অভিনয়ে এসেছেন?
২০১৬ সাল থেকে মডেলিং করেছি। তার পর অভিনয়ের অফার পাই। আমার স্কুলিং এপিজে-তে। দিল্লি থেকে ফাইন আর্টসে ডিপ্লোমা করেছি। কিন্তু অভিনয় করার ইচ্ছেটা ছোটবেলা থেকেই ছিল। আম্মাও খুব উৎসাহ দিতেন।

শেষ প্রশ্ন। শনের রিলেশনশিপ স্টেটাস কী?
আমি সিঙ্গল। (হাসি) এখন কাজই আমার প্রায়োরিটি।

The post সেলুলয়েডের সিরাজদৌল্লা হয়ে ওঠার জার্নি কেমন? গল্প শোনালেন শন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement