সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগে মানবতা, পরে ধর্ম। রাজস্থানের উদয়পুরের এক মসলিম যুবক যেন সেটাই আরও এক বার প্রমাণ করলেন। করোনা আক্রান্ত ২ হিন্দু মহিলার প্রাণ বাঁচাতে রোজা ভেঙে রক্ত দিলেন তিনি। আর তাঁর এই মানবিকতার কাহিনি এখন সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ছড়িয়ে পড়েছে।
উদয়পুরের আকিল মনসুরি সিভিল কন্ট্রাক্টরের কাজ করেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মতো তিনিও পবিত্র রমজান (Ramzan) মাসে রোজা রেখেছিলেন। কিন্তু বুধবার তাঁর সেই রোজা ভাঙতে হয়। কারণ সোশ্যাল মিডিয়া এবং রক্তদানের সঙ্গে যুক্ত এক সংগঠনের মাধ্যমে আকিল জানতে পারেন, করোনা (Corona) আক্রান্ত ২ মহিলার ‘এ পজিটিভ’ গ্রুপের প্লাজমা প্রয়োজন। কিন্তু কোথাও তা পাওয়া যাচ্ছে না। এই খবর শোনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আকিল এগিয়ে আসেন।
[আরও পড়ুন: প্রতি বছরই নিতে হবে করোনার টিকা, দাবি করলেন ফাইজারের সিইও]
বছর ছত্রিশের নির্মলা এবং বছর তিরিশের অলকার জন্য দ্রুত হাসলাতালে পৌঁছে যান আকিল। আকিল জানিয়েছেন, তিনি প্লাজমা দানের বিষয়টি জানতেন। কারণ করোনা থেকে সেরে ওঠার পর তিনি একাধিক বার প্লাজমা দিয়েছিলেন। বুধবার হাসপাতালে পৌঁছনোর পর তাঁকে পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। সব রকম পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান আকিল প্লাজমা দানের জন্য একদম ফিট। কিন্তু যখন জানতে পারেন সকাল থেকে আকিল কিছুই খাননি তখন চিকিৎসকরা তাঁকে কিছু খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
রমজান মাসেও অন্য কিছু না ভেবে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে রোজা ভাঙেন আকিল। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে খাবার খান। এর পর তাঁর রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্ত দেওয়ার পর আকিল বলেন, মানুষ হিসাবে তিনি কর্তব্য পালন করেছেন। তিনি যা করেছেন সেটা তাঁর দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। রক্ত দিতে গিয়ে রোজা ভাঙার জন্য তাঁর কোনও আফসোস নেই। তিনি সন্ধ্যায় ওই দুই মহিলার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। তাঁদের জন্য প্রার্থনাও করেন। আকিল মনসুরি জানিয়েছেন, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর ২০২০-র সেপ্টেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিলেন। এবং করোনা থেকে সেরে ওঠার পর প্রত্যেককে একই কাজ করতে উৎসাহিত করেন।