shono
Advertisement

ইউজিসি-র নির্দেশিকা উড়িয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে রমরমিয়ে চলছে জাঙ্ক ফুড

দই-চিঁড়েতে মত নেই পড়ুয়াদের৷ The post ইউজিসি-র নির্দেশিকা উড়িয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে রমরমিয়ে চলছে জাঙ্ক ফুড appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 11:30 AM Aug 24, 2018Updated: 12:00 PM Aug 24, 2018

রিংকি দাস ভট্টাচার্য: প্রেপ থেকে বারো ক্লাস। নিত্যদিন মায়ের দেওয়া ঘরোয়া খাবার টিফিন বক্স থেকে বার করে মুখে পুরতে হয়েছে। একঘেয়ে, রোমাঞ্চহীন। কিন্তু স্কুলের গণ্ডি ছাড়িয়ে কলেজের আঙিনায় পা রাখা ছেলেমেয়েরা আর উদরপূর্তির সেই বাঁধাধরা গতে চলতে নারাজ। অন্তত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে কী খাব কী খাব সে ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা চায় জেনারেশন ওয়াই। যে কারণে জাঙ্কফুডে রাশ টানার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ইউজিসির তরফে নির্দেশিকা জারি হলেও, যাদের স্বাস্থ্য রক্ষার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ, সেই পড়ুয়াদেরই বিশেষ কোনও হেলদোল নেই। কলেজ ক্যান্টিন বা আশপাশের দোকানে রোল-চাউমিন-মোমোতেই মজে আছে তাদের বেশিরভাগ।

Advertisement

[অটোর দাদাগিরি রুখতে এবার পাঁচ মিনিটে বাস, উল্টোডাঙায় নতুন দাওয়াই]

দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে জাঙ্ক ফুড বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চায় কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে। নিয়ম চালু হলে হলে এবার থেকে ক্যান্টিনে বসে আড্ডা মারতে মারতে আর বার্গার-রোল-চাউমিন ইত্যাদি খেতে পারবেন না শিক্ষার্থীরা। মিলবে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। নবপ্রজন্মের ছেলেমেয়েদের অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা কমাতে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ইউজিসি সূত্রে খবর। প্রস্তাব পাঠানো হবে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলেই চালু হবে নতুন নিয়ম। তবে এই পদক্ষেপ নতুন নয়। বছর দু’য়েক আগেও একটি নির্দেশিকা জারি করে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইউজিসি। তবু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কিংবা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্রি কমেনি জাঙ্ক ফুডের। বুধবার উপাচার্যদের চিঠি দিয়ে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ জানতে চেয়েছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জাঙ্কফুড বন্ধ করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু ইউজিসি যা-ই পদক্ষেপ নিক না কেন, রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে রমরমিয়ে চলছে জাঙ্কফুডের বিক্রি। হবে না-ই বা কেন! কলেজ-ক্যান্টিনে রোল-চাউমিনের বদলে টকদই-চিঁড়ে কিংবা রুটি-আলুভাজার কথার ভাবতেই নারাজ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া মৌমিতা চক্রবর্তীর কথায়, “সারাজীবন বাড়ির পাউরুটি-কলা খেয়ে বড় হলাম। কলেজের অন্যতম আকর্ষণ ক্যান্টিনের এগ চাউ। ওটা না থাকলে ক্যান্টিনই বন্ধ হয়ে যাবে।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র অনুভব কুণ্ডুর যুক্তি আলাদা। “দু’টি ক্লাসের ফাঁকে খিদে পেলে, বা অল্প সময়ের মধ্যে পেট ভরায় জাঙ্ক ফুড। সেটা বন্ধ হয়ে গেলে তো পেটে তালা পড়ে যাবে।”–বলছেন তিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরের ছাত্র শুভজিৎ সরকারও জাঙ্কফুড রাখার পক্ষে। তাঁর প্রশ্ন, জাঙ্ক ফুড যদি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিবেশিত হয়, তাহলে সমস্যা কোথায়!

[মারণ ‘মোমো’ রুখতে সচেতনতার দাওয়াই পুলিশের]

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “ইউজিসির চিঠি পেয়ে বছর দু’য়েক আগে ক্যান্টিনগুলিকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিলাম। ফের নির্দেশ এলে আবারও সতর্ক করব।” কিন্তু সতর্ক করা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনগুলিতে যে চপ-চাউমিন বিক্রি হচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন সুরঞ্জনবাবু। তাঁর কথায়, “সতর্ক করতে পারি, কিন্তু গিয়ে গিয়ে দেখা তো সম্ভব নয়।” অবশ্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনে জাঙ্কফুড বা তেলেভাজা খাবার বিক্রি হয় না বলেই দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলিকে সতর্ক করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ইউজিসি এবং পড়ুয়াদের মধ্যে এই ঠান্ডা-যুদ্ধে ফাঁপরে পড়ছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন মালিকরা। মান না কুল, কোনটা রাখবেন, সে বিষয়ে কার্যত দিশেহারা তাঁরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আহার’ ক্যান্টিনের মালিক সুশান্ত জানার কথায়, বিশ্ববিদ্যালয় কড়া নির্দেশ দিলে জাঙ্ক ফুড বন্ধ করতেই হবে। পরক্ষণেই তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, কিন্তু কমবয়সিদের ছেলেমেয়েগুলোর আবদার মেটাব কী ভাবে!

The post ইউজিসি-র নির্দেশিকা উড়িয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে রমরমিয়ে চলছে জাঙ্ক ফুড appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement