shono
Advertisement

বীরভূমের স্নাতক ছাত্রীর হাতে রূপ পাচ্ছেন দুর্গা, মেয়ের কৃতিত্বে গর্বিত পিতা

অনুভব দিয়ে মায়ের মূর্তি গড়েন জ্যোৎস্না পাল। The post বীরভূমের স্নাতক ছাত্রীর হাতে রূপ পাচ্ছেন দুর্গা, মেয়ের কৃতিত্বে গর্বিত পিতা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:53 PM Sep 22, 2019Updated: 08:53 PM Sep 22, 2019

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দুর্গা গড়ছেন দুর্গা। দু’হাতের কারিকুরিতেই রূপ পাচ্ছেন দুর্গতিনাশিনী। মায়ের হাত,আঙুল, কোমরের ভাঁজ – নিজের হাতে নিবিড় মনোযোগ সহকারে এসব নিঁখুত করে গড়ে তুলছেন স্নাতকের ছাত্রীটি। আগমনি আবহে বীরভূমের এই সদ্য তরুণী প্রতিমাশিল্পী জ্যোৎস্না পাল নজর কাড়ছেন সকলের। দু হাতে সমস্ত সামলে ইনিই যেন হয়ে উঠেছেন দশভুজা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: জঙ্গল এলাকার মানুষের হাতে পুজোয় নতুন উপহারের ডালি তুলে দিল ‘শের’]

বীরভূম-ঝাড়খণ্ড সীমানার আমজোড়ার বাসিন্দা জ্যোৎস্না পাল। বাড়িতে ঠাকুরতলায় মাটির তাল বানাতে বানাতে প্রতিমার মূর্তি বানানোর পাঠ শুরু। সেই মাটির তাল যখন এই মেয়ের হাতের ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে চিন্ময়ী হয়ে উঠছেন, তখন তার নবম শ্রেণি। দেখতে দেখতে সেই এখন স্নাতকের ছাত্রী। পাশেই ঝাড়খণ্ডের রানিশ্বর কলেজের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষে পাঠরতা। কিন্তু রক্তে তাঁর ঠাকুর তৈরির নেশা। দিদি কৃষ্ণা ছিলেন তাঁর মতো মূর্তি তৈরির কারিগর। জ্যোৎস্না জানাচ্ছেন, এটা তাঁদের পরম্পরা। দাদু হারাধন পাল এখনও প্রতিমা গড়েন। আর বাবা গোপীনাথ পাল, তাঁর প্রতিমা তৈরির গুরু থেকে এখন তাঁর সঙ্গী। কাকাও প্রতিমার রূপদান করেন।

পড়াশোনা, ঘরের কাজ সামলে এবছরও কলেজ ছাত্রীর নির্মিত প্রতিমার সংখ্যা জানলে রীতিমতো বিস্মিত হতে হয়। পাঁচটি দুর্গা তৈরি করছেন জ্যোৎস্না। লক্ষ্মী প্রতিমা ১১ টা। কালী ঠাকুর ১০ টা। আশেপাশের বড়গ্রাম, লাঙ্গুলিয়া, কেন্দুলি, রায়পুর ও রানিবহালের মন্দিরের জন্য তৈরি করেছেন দুর্গা প্রতিমাগুলি। বাবা গোপীনাথ ২০ বছর ধরে প্রতিমা গড়ছেন। বড় মেয়েও একইভাবে শিখেছিল। ছোট মেয়েও খেলতে খেলতে শিখে গিয়েছে। তবে বাবার ইচ্ছে, তাঁর কনিষ্ঠা কন্যাটিকে ভাল কারিগর হিসেবে তৈরি করার। আর মেয়ের ইচ্ছে, কলেজ পাস করে বাংলায় স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করার। জ্যোৎস্নার কথায়, ‘এখনও ঠিক শক্ত করে খড় দিয়ে দুর্গার কাঠামো বাঁধতে পারি না। বাবা বেঁধে দেন।’ কিন্তু তাঁর মনে হয় যে তিনি মা দুর্গাকে যে চোখে দেখেন, তার প্রতিমাও সেই অনুভব দিয়েই গড়া। বিশুদ্ধ চিত্তে, মায়ের রূপকল্পে তিনি মাকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তবে গত পাঁচ বছরে নিজের তৈরি মায়ের মূর্তিই পুজোয় তাঁর আনন্দের উৎস হয়ে ওঠে।

[আরও পড়ুন: তীব্র দহনজ্বালা থেকে পৃথিবীকে মুক্তির পথ দেখাবে খিদিরপুরের ২৫ পল্লির পুজো]

জ্যোৎস্না জানাচ্ছেন, ‘ষষ্ঠীর দিন সব ঠাকুর শেষ করে আমি যাই আমার বাজার করতে। মা আমাকে শাড়ি থেকে লেগিংস কেনার খরচ জোগান। কিন্তু কতদিন এই মাটির ভালোবাসা? বাবা গোপীনাথ বলেন, ‘ও যতদিন চাইবে। আমি জ্যোৎস্নাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি। দশভুজা গড়লেও ও আমার কাছে দু’হাতের দুর্গা। আমরা বাপ-বেটিতে বিভিন্ন প্রতিমা দেখতে বেরই। দেখি, বড় শিল্পীরা কী করে প্রতিমা গড়েন।’ তখন স্বপ্ন বুনে যায় মন। গোপীনাথের মনে হয়, মেয়ে এমন প্রতিমা গড়েছে যাতে মায়ের দিব্যছটায় জ্যোৎস্নায় ভিজেছে চরাচর।
ছবি: শান্তনু দাস।

The post বীরভূমের স্নাতক ছাত্রীর হাতে রূপ পাচ্ছেন দুর্গা, মেয়ের কৃতিত্বে গর্বিত পিতা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement