shono
Advertisement

সাত বোনকে কালীরূপে পুজো করেন এই গ্রামের বাসিন্দারা

জানেন, কেন? The post সাত বোনকে কালীরূপে পুজো করেন এই গ্রামের বাসিন্দারা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 04:03 PM Oct 28, 2018Updated: 02:54 PM Oct 30, 2018

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: মন্দিরে সাতটি বেদিতে সাতটি কালীপ্রতিমা। কারওর রং নিকশ কালো তো কারওর রং নীলাভ আবার একটি কালীমূর্তির রং সবুজাভ। এঁরা প্রত্যেকে সম্পর্কে একে অপরের বোন। এঁদের কাউকেই বিসর্জন দেওয়া হয় না। মন্দিরের বাইরে খোলা আকাশের নিচে দুই বোনকে রেখে দেওয়া হয়। প্রকৃতির খেয়ালে গলে যায় প্রতিমার মাটি। আর এই সাত বোনের পুজো করেন কোনও ব্রাহ্মণ নয়, গ্রামের বাউরি সম্প্রদায়ের ছেলে বা মেয়েরা। বীরভূমের লাভপুরে এভাবেই কালী রূপে পুজো হয়ে আসছে সাত বোনের। দীপান্বিতা কালীপুজোর দিনে যা ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে ভিন জেলা থেকে আগত অসংখ্য পুণ্যার্থীদের আগ্রহ তুঙ্গে ওঠে।

Advertisement

[ লক্ষ্মীপুজো মিটতেই ফের দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য বেনাগ্রাম, পাকড়াও ৪]

বীরভূমের লাভপুর থানার দারোন্দা গ্রাম। বহু প্রাচীন এই গ্রামের পাশে রানিপাড়ায় সে সময় এলাকার রাজা-রানিরা থাকতেন। রানিদের নিরাপত্তার জন্য পরিখা দিয়ে ঘেরা ছিল গোটা গ্রাম। কোনও প্রবেশদ্বার ছিল না গ্রামের। নৌকা করে গ্রামে ঢুকতে হত। সেইসব আজ অতীত। কিন্তু দ্বারোন্দা গ্রামে এখনও হাতিশালা, জলঘর, রাজবাঁধ রয়েছে। কথিত আছে, দারোন্দা গ্রামে এক বিখ্যাত সাধক মা কালীর সাধনা করতেন। দীর্ঘদিন সাধনা করার পর একদিন তিনি চোখ খুলতেই দেখেন তাঁর সামনে অপূর্ব সুন্দরী সাত কিশোরী এলো কেশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সাধক প্রথমে চমকে গেলেও পরে বলেছিলেন, “কে তোমরা মা?’ সাত কিশোরীই জানিয়ে দেয়, ‘তুই যাঁর সাধনা করছিস আমরা তাঁরাই। আমরা সাত বোন, এই সাত বোনের পুজোর ব্যবস্থা করতে হবে তোকে।” সাধক বলে ওঠেন, ‘আমি ব্রাহ্মণ নই মা, আর আমার পুজো করার আর্থিক ক্ষমতাও নেই। এরপরেই ওই সাত বোন সমস্বরে বলে ওঠেন, “পুজোর ব্যবস্থা আমরাই করে দেব। তুই পুজোর উদ্যোগ নে। গ্রামে চারিদিকে বসন্ত, কলেরা হচ্ছে, আমাদের চরণামৃত মেশানো ওষুধ যে খাবে তাঁর আর কলেরা, বসন্ত হবে না।”

সেই থেকে লাভপুরের দ্বারোন্দা গ্রামে কালীরূপী সাত বোনের পুজো হয়ে আসছে। একটি ঘরে সাত বেদিতে অধিষ্ঠান করছেন সাত বোন। কার্তিক মাসের দীপান্বিতা অমাবস্যায় পুজো হলেও প্রতি আমাবস্যা তিথিতেই সাত বোনের পুজো হয়, চলে নিত্যসেবা। এই পুজো কোনও ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের মানুষজন করেন না, মূলত গ্রামের পত্রধর বা বাউরি সম্প্রদায়ের মানুষজনই করে থাকেন।  যে পরিবারের কোনও পুরুষ সদস্য নেই সেই পরিবারের মহিলারা পুজো করে থাকেন। এখানে কোনও কালীপ্রতিমার বিসর্জন হয় না। প্রতি বছর সাত বোনের মধ্যে দুই বোনকে খোলা আকাশের মাঝে রাখা হয়। ঝড়, বৃষ্টিতে প্রতিমা থেকে মাটি গলতে থাকে। পুজোর আগে আবার দু’টি মূর্তি গড়তে হয়। সাত বোনের মধ্যে রঙের পার্থক্যও এই পুজোর বড় বিশেষত্ব। প্রতিমাগুলিতে কালোর ভাব বেশি থাকলেও কারওর রং হয় নীল, তো কারও সবুজাভ। কালীপুজোর রাতে দ্বারোন্দা গ্রামে জাগ্রত এই সাত বোনের পুজো দেখতে কয়েক হাজার ভক্ত ভিড় করেন।

[ মরণাপন্ন প্রসূতি, দিনভর মাইকিং করে রক্তের জোগাড় হাসপাতালের]

The post সাত বোনকে কালীরূপে পুজো করেন এই গ্রামের বাসিন্দারা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement