সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েনের পর এবার মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ভারতের রাজনীতিতে এমন ঘটনা লজ্জাজনক, নজিরবিহীন বলেই ব্যাখ্যা করলেন তিনি। অভিষেকের দাবি, বাংলায় হার বিজেপি মেনে নিতে পারেনি। সেই কারণেই এসব হচ্ছে। এখানেই থামেননি তিনি। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলছেন, মহামারী আইন প্রয়োগ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও (PM Modi) শোকজ করা উচিত।
বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অভিষেক। সেখানেই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মানুষের জন্য কাজ করছিলেন উনি। যিনি কাজ করছেন, তাঁকে কেন বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে শোকজ করা হচ্ছে? এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। তাহলে যাঁরা রাস্তায় নেমে কোভিড ছড়াচ্ছে, তাঁদের কেন শোকজ করা হবে না? রাজনৈতিক পার্টিগুলিকে কেন শোকজ করা হবে না? কেন্দ্রীয় সরকার যদি নিরপেক্ষ হয়, আমাকেও শোকজ করুন, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও (অমিত শাহ) শোকজ করুন। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকেও (জেপি নাড্ডা) শোকজ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীকেও শোকজ করুন।”
[আরও পড়ুন: ঢেলে সাজবে ‘যশ’ বিধ্বস্ত দিঘা, সৌন্দর্যায়নের নকশা বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী]
অতিমারী পরিস্থিতিতে বঙ্গে বারবার নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সে কথাই মনে করিয়ে অভিষেক বলেন, “যখন দেশের প্রধানমন্ত্রীর বলা উচিত ছিল, যে করোনা পরিস্থিতিতে সবাই বাড়িতে থাকুন, সেখানে আসানসোলের জনসভায় গিয়ে তিনি বলছেন, এত মানুষের জমায়েত দেখে ভাল লাগছে!”
উল্লেখ্য, গত ৩১ মে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসর গ্রহণের দিন ছিল। কিন্তু রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি এবং ঘূর্ণিঝড় যশ পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁর কর্মজীবনের মেয়াদ তিন মাস বৃদ্ধির আবেদন জানায় রাজ্য। তাতে সায়ও দেয় মোদি সরকার। কিন্তু তার কয়েক দিনের মধ্যেই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলির নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। এর পরই তুঙ্গে ওঠে টানাপোড়েন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, ৩১ মে-ই মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর নিচ্ছেন আলাপন। তিন বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টার পদে থাকবেন তিনি।
এদিকে, এদিন ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ বা ‘ইয়াস’ (Cyclone Yaas) বিধ্বস্ত পাথরপ্রতিমার বিভিন্ন এলাকা জলপথে ঘুরে দেখেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন কোন এলাকায় ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। ত্রাণ শিবিরে থাকা দুর্গতদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। জানান, রাজ্য সরকার দুর্গতদের পাশে আছে। মিলবে আর্থিক সাহায্যও। এদিন সন্দেশখালিও যান অভিষেক। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক জায়গা ঘুরে দেখবেন তিনি।