সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুল শুরুর সময় গাওয়া যাবে না জাতীয় সংগীত ‘জনগণমন’ এবং ‘বন্দেমাতরম’৷ বলা যাবে না ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’৷ এমনই এক নির্দেশ জারি করে বিতর্কের মুখে পড়ল এলাহাবাদের কাছে সইদাবাদ এলাকায় এম এ কনভেণ্ট নামে একটি বেসরকারি স্কুল৷ স্কুলের ম্যানেজার মহম্মদ জিয়াউল হকের জারি করা ওই নির্দেশের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন বিদ্যালয়ের ৮ জন শিক্ষক৷ যাঁদের মধ্যে ওই স্কুলের প্রিন্সিপালও রয়েছেন৷
অন্যদিকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি অভিযোগ করেছে, সমাজবাদী পার্টি সরকার ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে৷ সে কারণে তারা অপরাধী ও ধর্ষকের পাশাপাশি দেশবিরোধী শক্তিকেও উৎসাহ জোগাচ্ছে৷ ঘটনার পিছনে রাজ্যের এক মন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে৷ এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল৷
বিতর্কিত স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩৩০৷ যাদের মধ্যে ২০০ জন হিন্দু এবং ১৩০ জন মুসলিম সম্প্রদায়ের৷ প্রিন্সিপাল রীতু শুক্লা বলেছেন, “ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে যেভাবে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না৷” অন্যদিকে স্কুল ম্যানেজার জিয়াউল হক বলেছেন, “কিছু মুসলিম অভিভাবকের আপত্তিতেই এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে৷ মুসলিম অভিভাবকদের দাবি, জাতীয় সংগীতে বলা হয়েছে ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’৷ কিন্তু মুসলিম ধর্মে আল্লাহর চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না৷ আল্লাহই সকলের ভাগ্য বিধাতা৷ এছাড়া বন্দেমাতরমে দেশকে খোদা এবং ধর্মের চেয়ে বড় বলা হয়েছে৷ প্রকৃত মুসলিমদের কাছে এটা কখনওই গ্রহণযোগ্য নয়৷”
হক আরও বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্টেরও স্পষ্ট বক্তব্য, কারও ধর্মের বিরোধী কোনও কাজ কাউকে কখনওই জোর করে করানো যাবে না৷” হকের দাবি, জাতীয় সংগীত, বন্দেমাতরম এবং সরস্বতী বন্দনা স্কুলে নিষিদ্ধ করার ঘটনা আগেও ঘটেছে৷ তাঁর জারি করা এই নির্দেশ নতুন কিছু নয়৷
নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে হক বলেন, “আমাদের স্কুলে কোনও দিনই জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়নি৷ ভবিষ্যতেও তা গাওয়া হবে না৷ কারণ এই গান ইসলাম বিরোধী৷ আমি এমন একটা স্কুল চালাই, যেখানে আমাকে অভিভাবকদের মতামত মেনে চলতে হয়৷” স্কুল মানেজারের বক্তব্য জানার পর পদত্যাগী প্রিন্সিপাল বলেছেন, “ওই নির্দেশ দেশবিরোধী কাজ৷ দেশবিরোধী কাজের প্রতিবাদে কী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি৷”
অন্যদিকে এলাহাবাদের জেলাশাসক সঞ্জয় কুমার বলেছেন, “বিতর্কিত স্কুলটির কোনও অনুমোদন ছিল না৷ যদিও সেখানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা চলত৷ বেআইনিভাবে স্কুল চালানোর জন্য অবশ্যই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ তবে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্যও শোনা হবে৷” শিক্ষকদের পদত্যাগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হক বলেন, শনিবার থেকে কয়েকজন শিক্ষক স্কুলে আসছেন না৷ কেন তাঁরা স্কুলে আসছেন না সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ম্যানেজার৷
The post জাতীয় সংগীত গাওয়া যাবে না, ফতোয়া স্কুলের appeared first on Sangbad Pratidin.