সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুক্তির আগে থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছে ‘শিকারা‘। ছবি নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্টে। নেটদুনিয়ায় উঠেছে বয়কটের ডাক। কিন্তু সেসব ছাড়িয়ে সাফল্যের সঙ্গে যাত্রা শুরু করেছে বিধু বিনোদ চোপড়ার ছবি। ছবি দেখে কেঁদেছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। চোখ জল এসেছে লৌহপুরুষ লালকৃষ্ণ আডবানীর। কিন্তু নিন্দুকদের শাণিত জিহ্বা তাতেও থামেনি। পরিচালকের বিরুদ্ধে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বাণিজ্যিকীকরণের অভিযোগ উঠেছে। তাদের জন্যই এবার ফেসবুকে খোলা চিঠি লিখলেন পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া।
চিঠিতে বিধু বিনোদ চোপড়া বাস্তুহারা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কথা বিস্তারিতভাবে লিখেছেন। তবে চিঠিতে সম্ভাষণ করেছেন দেশের যুবসমাজকে। লিখেছেন, ‘তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ। তাই আমার মনে হয় তোমাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা দরকার। শিকারার সঙ্গে যুক্ত সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি নিয়ে আমি বেশ বিরক্ত। আমি এমন একজন কাশ্মীরি হিন্দু যে এই ঘটনার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কাশ্মীরে আমার বাড়িতে হামলা হয় ও আমার পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয়। আমার মা পরিন্দা ছবির প্রিমিয়ারে একটি ছোট্ট সুটকেস নিয়ে এসেছিলেন। তিনি আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। তিনি মুম্বাইয়ের নির্বাসনেই মারা যান। আপনারা বেশিরভাগ আমাকে মুন্নাভাই এবং থ্রি ইডিয়টসের মতো ছবির প্রযোজক হিসেবে চেনেন। আসলে আমি ৪০ বছর ধরে চলচ্চিত্র বানাচ্ছি। আমার প্রথম শর্ট ফিল্ম ১৯৭৯ সালে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। সিনেমায় আমার যাত্রা অত্যন্ত সন্তোষজনক। আমি কখনও আমার মনে এক বিন্দুও সন্দেহের অবকাশ রাখিনি।’ কথা প্রসঙ্গে পরিচালক ইঙ্গমার বার্গম্যানের কথাও তুলে আনেন বিধু বিনোদ চোপড়া।
[ আরও পড়ুন: ‘আমি স্বার্থপর’, অস্কার পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন অভিনেতা জোয়াকিন ফিওনিক্স ]
এরপর তিনি বলেন, ‘এখন আমার বিরুদ্ধে আমার আত্মা বিক্রি করার অভিযোগ উঠছে। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিষয়টিকে বাণিজ্যিকীকরণ করার অভিযোগ আনা হচ্ছে। এটি অযৌক্তিক। কারণ আমি অর্থ উপার্জন করতে চাইতাম, তাহলে মুন্নাভাই বা থ্রি ইডিয়টসের সিক্যুয়েল বানাতাম। কিন্তু আমি শিকারা তৈরি করেছি কারণ একটি ঘরের ক্ষতি মানে কী তা আমি দেখেছি। আপনার বেশিরভাগই আমাদের ট্র্যাজেডি সম্পর্কে অবগত নন। ১৯৯০ সালে, যখন আমাদের জন্মভূমি থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, তখন আপনারা জন্মাননি। আর যদি আপনারা ইতিহাস না জানেন, তবে এটির পুনরাবৃত্তি করার জন্য আপনারাই নিন্দিত হবেন। শিকারা আমার সত্যিকারের গল্প। আমার মায়ের সত্য। এটি আমার সহ-লেখক রাহুল পাণ্ডিতার সত্য। এটি এমন একটি সম্প্রদায়ের সত্য যা এই ধরণের ট্রমা সত্ত্বেও বন্দুক ধরেনি বা ঘৃণা ছড়ায়নি। শিকারাতেও তাই করার চেষ্টা হয়েছে।’
এরপর বিধু বিনোদ চোপড়া অহিংসার বার্তা দিয়েছেন তাঁর লেখায়। পরিচালক লিখেছেন, ‘হিংসা শুধু হিংসার জন্ম দেয়। আমি দেখেছি ঘৃণার জন্য আমার ঘর ধ্বংস হয়েছে। এটি আপনার ক্ষেত্রে হতে দেবেন না। আমি চাই আপনার ভবিষ্যৎ আমার অতীত থেকে আলাদা হোক।’
[ আরও পড়ুন: তাইকোন্ডায় স্বর্ণপদক শাহরুখপুত্র আব্রামের, শুভেচ্ছার বন্যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ]
The post ‘শিকারা’-এ কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বাণিজ্যিকীকরণের অভিযোগ, মোক্ষম জবাব বিধু বিনোদের appeared first on Sangbad Pratidin.