সংক্ষিপ্ত স্কোর : দক্ষিণ আফ্রিকা ২৬৯/৮ (ডুপ্লেসি ১২০, কুলদীপ ৩/৩৪, চাহাল ২/৪৫) ভারত : ২৭০/৪ (কোহলি ১১২, রাহানে ৭৯)।
দীপ দাশগুপ্ত: ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ওয়ান ডে নিয়ে টিভি শো করতে হচ্ছে বলে, বিরাট কোহলি নিয়ে কিছু স্ট্যাটস ঘাঁটছিলাম। তা, ঘাঁটতে গিয়ে যে জিনিসটা চোখে পড়ল, রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতো। রান তাড়া করতে নেমে কোহলির কি না প্রায় সাড়ে চার হাজার রান! বৃহস্পতিবারেরটা নিয়ে আঠারোটা সেঞ্চুরি! সঙ্গে আবার আঠারোটা হাফসেঞ্চুরি! এ তো অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হয়।
[ ব্যাটসম্যানের আজব আউটের ভিডিও ভাইরাল, কড়া পদক্ষেপ আইসিসি-র ]
দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে কত শুনেছিলাম। ভারতের আসল শক্তি নাকি এ বার বোঝা যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার বাউন্সি ট্র্যাকে বোঝা যাবে বিরাট কোহলি সত্যি কত বড় ব্যাটসম্যান। আজকের পর সে সব কথাবার্তা কোথায় যাবে? মানছি, টেস্ট সিরিজটা আমরা হেরে গিয়েছি। কিন্তু ওয়ান্ডারার্সে জিতে প্রমাণ করে দিয়েছি যে, সিরিজটাও জেতার ক্ষমতা আমরা রাখতাম। তার পর ওয়ান ডে। আমি তো বলব, ওয়ান ডে সিরিজে ভারত পরিষ্কার ফেভারিট। এই বোলিং অ্যাটাক খেলিয়ে টিম কোহলিকে আটকাতে পারবে না দক্ষিণ আফ্রিকা। কোহলিকে তো আরওই পারবে না।
ডারবানে নিজের ৩৩ তম ওয়ান ডে সেঞ্চুরিটা করল বিরাট। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ দু’প্লেসির সেঞ্চুরির পালটা এ দিন শুধু ও দিল না। একই সঙ্গে ডারবানে এতদিনের যন্ত্রণার ইতিহাসটাও মুছে ফেলল। আজ পর্যন্ত ডারবানে না টেস্ট, না ওয়ান ডে- কিছুতেই জেতেনি ভারত। কোহলি সেই রেকর্ডকে আর এগোতে দিল না। এ দিনের পর কোহলিকে সর্বকালের সেরা চেজমাস্টার না বললেই অন্যায় হবে। বরং বলব যে, এর পর প্রতিপক্ষ যখন টস জিতে ব্যাটিং-বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় শিশির, পিচের মতো নানা ফ্যাক্টর মাথায় রাখবে, ঠিক তেমনই আরও একটা জিনিস রাখবে। বিরাট কোহলি ফ্যাক্টর।
এর পর দক্ষিণ আফ্রিকা বাকি সিরিজে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সাহস পাবে বলে মনে হয় না। যে যা-ই বলুক ডারবান উইকেটে সহজ ছিল না ব্যাট করা। একটু স্লো লাগছিল। মনে হচ্ছিল, দক্ষিণ আফ্রিকা বোধহয় কুড়ি-পঁচিশটা রান বেশি করে ফেলল। ভুল করেছিলাম। বোঝা উচিত ছিল যে, ভারতীয় টিমে একটা কোহলি আছে যে কি না পিচকে পাত্তা না দিয়ে পাঁচ-ছ’ওভার আগে খেলা শেষ করে দেবে।
[ সমর্থকদের বিক্ষোভ সামলাতে ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনে পুলিশ পিকেট ]
অজিঙ্ক রাহানের কথাও বলতে হবে। টেস্ট সিরিজের প্রথম দু’টো ম্যাচে ওকে খেলায়নি ভারত। কিন্তু তৃতীয়টা থেকে খেলছে আর কী ব্যাটটাই না করছে! মনে রাখতে হবে, ভারত এ দিন ৬৭—২ হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে রাহানের ৭৯ রানের ইনিংসটা অমূল্য। ২০১৯ বিশ্বকাপের দিক থেকে দেখলে তো আরওই। কোহলিরা ইতিমধ্যেই বলে রেখেছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই য়ান ডে সিরিজটা ওরা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে দেখবে। সে দিক থেকে বলতে গেলে, দু’টো স্লট নিয়ে ভারতের ভাবতে হত। এক, নাম্বার ফোর। দুই, সিক্সথ বোলার।
দ্বিতীয়টা নিয়ে সংশয় আছে। কিন্তু প্রথমটা নিয়ে আজকের পর থেকে চিন্তা কমবে। আমার মতে, রাহানেকেই এর পর থেকে চার নম্বরে খেলানো হোক। টেকনিক্যালি পারফেক্ট, হাতে বড় শট আছে। কঠিন পরিস্থিতিতে ভাল করতে পারে, দেখিয়ে দিয়েছে। তবে সিক্সথ বোলার নিয়ে ভাবতে হবে টিমকে। এ দিন দক্ষিণ আফ্রিকা যে ১৩৪-৫ হয়ে যাওয়ার পরেও যে ২৬৯ পর্যন্ত গিয়েছে, তার কারণ সিক্সথ বোলার নিয়ে ভোগা। কোহলি বোধহয় ভেবেছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার নড়বড়ে সময়ে কেদার যাদব আর হার্দিক পান্ডিয়াকে দিয়ে যতটা সম্ভব ওভার করিয়ে দেবে। ভাল বিকল্প থাকলে, কোহলি তখন স্ট্রাইক বোলারদের আনতে পারত। ম্যাচও হয়তো তা হলে আরও তাড়াতাড়ি শেষ হত। কিন্তু সে সব পরে হবে। সময় আছে, হয়ে যাবে। এখনকার মতো জয়টা নিয়েই থাকা যাক। অভিশাপের ডারবানেই কিন্তু আমরা সিরিজে ওয়ান নিল আপ!
The post ‘কোহলিই সর্বকালের সেরা চেজমাস্টার’ appeared first on Sangbad Pratidin.