অভিষেক চৌধুরী, কালনা: নদিয়ার চাকদহের পর এবার পূর্ব বর্ধমানের কালনায় (Kalna) বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যু। সোমবার সকালে বাড়ির পাশের বাগান থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল গেরুয়া শিবিরের ওই কর্মীকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দিয়ে গিয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের পালটা দাবি, আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে বিজেপি কর্মী হিসেবে মানতেও নারাজ তৃণমূল। এই ঘটনায় এলাকার উত্তেজনা ছড়িয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছে কালনা থানার পুলিশ। তবে দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা।
শান্তিপূর্ণভাবেই মিটেছে রাজ্যের ভোটপঞ্চমী। কিন্ত তার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দফায় দফায় রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটছে। উল্লেখ্য, নির্বাচনের পরদিন অর্থাৎ রবিবার সকালে নদিয়ার চাকদহ বিধানসভার অন্তর্গত শিমুরলিয়া গ্রামে এক বিজেপি কর্মীর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ করা হয়েছিল, পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে। ঘটনার জন্য তৃণমূলকেই দায়ি করেছিল বিজেপি শিবির। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই কালনায় আরেক বিজেপি কর্মীর দেহ উদ্ধার হল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কালনার কল্যাণপুরে নিজের বাড়ির পাশেই এক বাগান থেকে অখিল প্রামাণিকের (৪৫) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর ভাই দেবু প্রামাণিকের অভিযোগ, “গত কয়েকমাস ধরেই আমাকে আর আমার ভাইকে হুমকি দিচ্ছিল তৃণমূল কর্মীরা। ওরাই আমার ভাইকে খুন করল।” পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অখিল। এদিন সকাল হতেই তাঁর খোঁজে বের হন স্ত্রী ও ভাই। তখনই বাড়ি থেকে দুশো-তিনশো মিটার দূরে অখিলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতদেহটির পা মাটিতে ঠেকেছিল। মাটিতে কয়েক ফোঁটা রক্তও পড়েছিল। তা দেখেই পরিবার ও বিজেপি কর্মীদের দাবি অখিলকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
ঘটনাপ্রসঙ্গে স্থানীয় বিজেপি নেতা সুশান্ত পাণ্ডে বলেন, “এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দলের কর্মীকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোষীদের শাস্তি চাই।” ঘটনাস্থলে এসেছেন বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ কুণ্ড। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে খুনের সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। প্রার্থী আরও জানিয়েছেন, মৃত কর্মীর পরিবারের দায়িত্ব নেবে দল। অন্যদিকে খুনের অভিযোগ উড়িয়ে কালনা ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়ের দাবি, “ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতার ভুগছিলেন। সেই যন্ত্রণায় আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। কোনওদিন তাঁকে বিজেপির সভা-মিছিলে দেখিনি। সমর্থক হতে পারে হয়তো।” তাঁর কথায়, “ময়নাতদন্ত হোক আগে তবেই বোঝা যাবে এটা খুন নাকি আত্মহত্যা।”