ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: চার বিধায়কের শপথের প্রক্রিয়া শুরুর আর্জি নিয়ে সরাসরি বিধানসভার সচিবালয় থেকে চিঠি গেল রাজভবনে। আলাদা করে পরিষদীয় দপ্তরের তরফেও একটি চিঠি পাঠানো হবে। ২২ জুলাই শুরু হচ্ছে বিধানসভার অধিবেশন। অভিজ্ঞমহল মনে করছে, নতুন চার বিধায়কের শপথ নিয়ে বিন্দুমাত্র গড়িমসি আর যাতে না হয়, তার জন্য প্রথমেই বিধানসভার সচিবালয় থেকে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি নিয়ে বিধানসভা যে ‘সিরিয়াস’ তা বুঝিয়ে দেওয়া হল। শপথ জটিলতা নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা যাতে কোনওভাবে না হয় তার জন্য অধিবেশনের শুরুতেই এই পর্ব মিটিয়ে ফেলতে চাইছে বিধানসভার সচিবালয়। সেক্ষেত্রে অধিবেশন শুরুর দু-তিনদিনের মধ্যেই উপনির্বাচনে জয়ী সুপ্তি পাণ্ডে, কৃষ্ণ কল্যানী, মুকুটমণি অধিকারী, মধুপর্ণা ঠাকুরের শপথ হয়ে যেতে পারে।
অধিবেশনে দণ্ড সংহিতা আর নিটের মতো একাধিক বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাবও আসতে পারে। এ নিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, মধুপর্ণা এই মুহূর্তে গোটা দেশে সর্বকণিষ্ঠ বিধায়ক। যার জেরে ইতিমধ্যে বিধানসভায় তিনি চর্চায়। এর মধ্যে তিনি-সহ চার নতুন বিধায়কের কে কোন আসনে বসবেন তারও প্রস্তুতি রয়েছে। অর্থাৎ, শপথ নিয়ে বিধানসভা যে সবরকম প্রস্তুতি নিয়েই ফেলেছে তা স্পষ্ট। রীতি অনুযায়ী উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়কদের শপথের জন্য রাজ্যপাল এই সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি দিয়ে সেই দায়িত্ব অধ্যক্ষের উপরই ন্যস্ত করেন।
[আরও পড়ুন: রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য নয়! মুখ্যমন্ত্রীকে বলল কলকাতা হাই কোর্ট]
বিধানসভার সচিবালয়ও এবার তেমনই প্রত্যাশা রাখছে। তবে রাজভবনের তরফে যদি আবারও গড়িমসির ইঙ্গিত মেলে তার জন্য বিকল্প পথের প্রস্তুতির রয়েছে। সেক্ষেত্রে অধিবেশন শুরু হয়ে গেলে পরিষদীয় রীতি মেনে অধ্যক্ষই নিজের ক্ষমতাবলে নতুন বিধায়কদের শপথ পড়িয়ে নিতে পারেন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “শপথ নিয়ে কোনও জটিলতা না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। গতবারের ঘটনা এবার যাতে তা না হয় সেটাই কাম্য। তবে অধিবেশন চললে অধিবেশনেই শপথ পড়ানোর সুযোগ থাকে। রাজভবন কী পদক্ষেপ করে আমরা আপাতত তার অপেক্ষায় থাকছি।”
এদিকে অধিবেশন শুরু হচ্ছে বলে বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চলতি মাসের বৈঠক একসঙ্গে সেরে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবারই ৩৩টি স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক হবে। বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি মোট ৪১টি। তার মধ্যে একইসঙ্গে এতগুলি কমিটির বৈঠক একই দিনে হওয়া নজিরবিহীন। একসঙ্গে একাধিক ঘরে বৈঠকগুলি একই সময়ে সেরে ফেলার নির্দেশও গিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগে। বেলা ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত দফায় দফায় এই বৈঠকগুলি হয়। সাধারণভাবে এক দিনে দুটি বা বড়জোর তিনটি বৈঠক হয়। প্রতিটি বৈঠকের জন্য ২ ঘণ্টা করে সময় ধার্য থাকে। বৃহস্পতিবার এতগুলি কমিটির বৈঠক একসঙ্গে হওয়ার জন্য এক ঘণ্টা করে সময় ধার্য হয়েছে। বেলা ১১টা থেকে ৩টের মধ্যেই ওইদিন বৈঠকগুলি সেরে ফেলা হবে। তার জন্য একেকটি ঘরে ৩ থেকে ৪টি করে বৈঠক হবে। একটি ঘরে এতগুলি করে বৈঠক হবে বলে দুটি বৈঠকের মাঝে কিছুটা বিরতি রাখা হচ্ছে। সেই কারণেই তার মেয়াদ কমানো হয়েছে। ওইদিন সব থেকে বেশি বৈঠক হবে কাউন্সিল চেম্বার অর্থাৎ নওসার আলি কক্ষে। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ, এস্টিমেট, রিফর্মস আর খাদ্যের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক হবে ওই ঘরে। আজিজুল হক কক্ষে হবে ৩টি। বাকি ঘরগুলিতেও ২-৩টি করে বৈঠক হবে। ২৮ নম্বর ঘরের এ, বি, সি, ডি, ই কক্ষে পরপর বৈঠকের ব্যবস্থা হচ্ছে। ২৪ নম্বরে একটি কক্ষে আবার ৩৩ নম্বরের একটি কক্ষেও বৈঠক হবে।