স্টাফ রিপোর্টার: এবারের রাজ্য বাজেটে বিপুল কেন্দ্রীয় বঞ্চনা রুখে বিকল্প আয়ের দিকনির্দেশ দিতে পারে সরকার। সম্ভাবনা এমনই। বুধবার চ্যালেঞ্জের বাজেট রাজ্যে। ওইদিন দুপুর ২টোয় বিধানসভায় বাজেট পেশ করবেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya)। ইতিমধ্যেই বাজেটের খুঁটিনাটিতে চোখ বুলিয়ে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। কেন্দ্র যতই আর্থিক বঞ্চনা করুক না কেন, রাজ্যে চলা কোনও সামাজিক প্রকল্পই বন্ধ হবে না। উলটে বিকল্প আয়ের দিশা দেখাতে পারে এবারের রাজ্য বাজেট (State budget)।
বাজেট নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও আর্থিক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান অমিত মিত্র (Amit Mitra)। বাজেট পেশের পর তিনিও ভারচুয়ালি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন। সরাসরি প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থমন্ত্রীও। বাজেট শেষে মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে যাবেন। নিয়ম মেনে ওইদিন দুপুর একটায় বিধানসভা ভবনে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরেই ক্যাবিনেট বৈঠকে বাজেট পাশ হবে।
কেন্দ্রে যেমন মহিলা অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman) বাজেট পেশ করেছেন, এ রাজ্যেও তেমনই মহিলা অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাত ধরে তা পেশ হবে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বাজেট পেশ করছেন চন্দ্রিমা। কোন শাড়ি পরে তিনি বাজেট পেশ করবেন, তাও নির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। কেন্দ্র যেভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাকে নানাভাবে বঞ্চিত করছে, তাতেও যে এ রাজ্যে উন্নয়ন যে কোনওভাবে থমকে থাকবে না, তা সোমবার বিধানসভায় জানিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে রাজ্যপালের ভাষণের বিতর্কে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিধানসভায় (Assembly) সরব হয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: বম্বে IIT-তে কোটায় ভরতি নিয়ে সহপাঠীদের লাগাতার কটূক্তি! মরণঝাঁপ দলিত পড়ুয়ার]
মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বাবুমশাই, আমরা যদি এতই খারাপ হই তাহলে দুয়ারে সরকারের পুরস্কার কেন্দ্র থেকে পেলাম কী করে? কন্যাশ্রী পেলাম কী করে? ইউনেস্কো পুরস্কার কীভাবে পেল বাংলা! কুৎসা, অপপ্রচারের পরও কাজ হচ্ছে। কৃষকদের বিমার টাকা আমরা দিচ্ছি। ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের থেকে ধান আমরা নিজেরা কিনি। চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। ফ্রিতে রেশন, চিকিৎসা, শিক্ষার ব্যবস্থা, উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণের ব্যবস্থা করেছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যতই বাধা দিতে চেষ্টা করুক ওরা, চাকরি আমরা দেবই। আইন মেনেই আমরা চাকরি দেব, শত চেষ্টা করেও আটকাতে পারবে না। দেউচা পাঁচমিতে পাঁচ লক্ষ চাকরি হবে। বানতলা লেদার কমপ্লেক্সে তিন লক্ষ চাকরি হয়েছে, আরও তিন লক্ষ হবে। এমএসএমই-তে আমরা এক নম্বর। সেখানে এক কোটি ৬৫ লক্ষ লোক কাজ করে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি এদিন সামাজিক প্রকল্পে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হন অন্য তৃণমূল বিধায়করা। রাজ্যপালের বাজেট ভাষণের প্রশংসা করে বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দুয়ারে সরকার, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ অধিকাংশ প্রকল্পই কেন্দ্রের কাছে প্রশংসিত। বাংলা প্রথম হয়েছে বহু ক্ষেত্রে। অথচ অন্য সব রাজ্যকে টাকা দিলেও বাংলাকে কোনও টাকা দিচ্ছে না। কারণ, ওদের ভয় আছে, আবার যদি বাংলা প্রথম হয়ে যায়!’’
[আরও পড়ুন: গ্রেওয়ালের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইকে টানতে চেয়েছিল BJP! মমতার তোপের মুখে শুভেন্দু]
এদিকে চলতি মাসেই জেলাসফরে বেরচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দুপুর ১২টায় দেশপ্রিয় পার্কে রয়েছে বড় কর্মসূচি। তার প্রস্তুতি সেরে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছেন বিধায়ক দেবাশিস কুমারকে। এই কর্মসূচি সেরে ওইদিনই তিনি যাবেন শিলিগুড়ি (Siliguri)। সেখানে একটি পরিষেবা প্রদানের সরকারি কর্মসূচি রয়েছে। পরদিনই তাঁর একদিনের মেঘালয় সফর। সেখানে জনসভা সেরে ওইদিনই কলকাতা ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী। ২৭ ফেব্রুয়ারি মেঘালয়ে নির্বাচন।