সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তদন্তকারী এজেন্সিগুলিকে কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধিতে কাজে লাগাচ্ছে বলে বারবার সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। এই অভিযোগের মাঝে একদিকে তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনের বাড়িতে আয়কর হানা। আবার অন্যদিকে দিল্লির বঙ্গভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে দিল্লি ও গুজরাট পুলিশ। সব মিলিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির সভা থেকে কেন্দ্রকে একহাত নিলেন তিনি।
গত ১২ জানুয়ারি জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের (Jakir Hossain) বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দপ্তর। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁর বাড়ি, অফিস, বিড়ি কারখানায় চলে জোর তল্লাশি। নগদ মোট ১১ কোটি টাকা উদ্ধার করেন আধিকারিকরা। ওই টাকা আয় বহির্ভূত নয় বলেই দাবি করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। এদিন কেন্দ্রের পদক্ষেপের বিরোধিতায় সরব হলেন মমতা।
তিনি বলেন, “জাকির একটা বিড়ি শিল্পপতি। তার যে ২০ হাজার বিড়ি শ্রমিক আছে জানোনা? কটা বিড়ি শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে? কটা গ্রামে ব্যাংক আছে? জাকির তৃণমূল করে বলে এই অবস্থা। বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে এজেন্সি পাঠাচ্ছে। জাকিরকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছিল। জাকিরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। দোষ করলে জাকিরকে শাস্তি দাও।” এরপরই নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকেও খোঁচা দেন মমতা। বলেন, “আমার দুর্ভাগ্য কোনও একজনকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে এজেন্সি পাঠাচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: দিদিকে নিয়ে দিবাস্বপ্ন! অমর্ত্যের মন্তব্যে কটাক্ষ বিজেপির, বিরোধিতা বাম-কংগ্রেসেরও]
তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলের গ্রেপ্তারি নিয়েও সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বঙ্গভবন থেকে গ্রেপ্তার করছে। রাজস্থান থেকে গ্রেপ্তার করছে। কয়েকদিন আগে শুনলাম আবার বঙ্গভবন থেকে গ্রেপ্তার করেছে। বঙ্গভবন রাজ্যের সম্পত্তি। বিনা অনুমতিতে কেউ গেলে আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে। আইন আইনের পথে চলবে। অনুমতি না নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে চাইতে পারে। কিন্তু অনুমতি না দেওয়ার পর বেআইনিভাবে দিল্লি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গুজরাট পুলিশ বঙ্গভবনে ঢুকেছে। সব সিসি ক্যামেরা খুলে নিয়ে গিয়েছে। গণতন্ত্রে যারা বুলডোজার চালায় তাদের বলি বুলডোজারের পরিবর্তে বুলডোজার নয়। তাদের ক্লোজার হবে।”
এছাড়া বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে আরও একবার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে সরব হন মমতা। পদ্মশিবিরকে ‘দিল্লির লাড্ডু’ বলে কটাক্ষ করে মমতার তোপ, “রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারদের কী আটকানো যায়? মাঝে মধ্যে খাঁচায় ধরে রেখে ট্রিটমেন্ট করা যায়। কিন্তু রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার যদি বিপ্লব করে, সেসব কুৎসা, অপপ্রচার, দাঙ্গার চক্রান্তকে নস্যাৎ করে দেবে।” পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, শাসক-বিরোধী আক্রমণের ঝাঁজ যে তত বাড়ছে তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।