রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ভোট (West Bengal Elections 2021) যত এগিয়ে আসছে জায়গায় জায়গায় উত্তেজনা ততই বাড়ছে। শাসক-বিরোধী চাপানউতোর কোথাও কোথাও সংঘর্ষের আকার নিচ্ছে। আর নন্দীগ্রামের (Nandigram) হাত ধরে এবার ভোটের ভরকেন্দ্রে চলে আসা পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই শাসক-বিরোধীর মধ্যে উত্তাপ বাড়ছে। তার আঁচ আরও একবার পাওয়া গেল খেজুরিতে (Khejuri)। মঙ্গলবার তৃণমূল এবং বিজেপির মিছিল মুখোমুখি হতেই দুই দলের সমর্থক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী।
সকালে খেজুরির বীরবন্দর এলাকায় প্রাচারে নামেন তৃণমূল (TMC) প্রার্থী পার্থপ্রতিম দাস। উলটোদিক থেকে বিজেপির (BJP) একটি মিছিল আসছিল। সেই মিছিলে বিজেপি প্রার্থী শান্তনু প্রামাণিক না থাকলেও স্থানীয় নেতারা মিছিল করছিলেন। অভিযোগ, মিছিল দু’টি কাছাকাছি আসার পরই উত্তেজনা তৈরি হয়। প্রথমে স্লোগান – পালটা স্লোগান, তারপর হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের সমর্থকরা। তৃণমূলের মিছিলের উপর প্রথম হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় পার্থপ্রতিমের গাড়ি।
হামলার খবর পেয়েই আশপাশ থেকে ছুটে আসেন অন্য তৃণমূল সমর্থকরা। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারত। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় খেজুরি থানার পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় এখনও সেখানে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে।
এই হামলার দায় একে অপরের উপর চাপিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি। তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতীম দাসের অভিযোগ অভিযোগ “সকালে নির্বাচনী প্রচারে খেজুরি বীরবন্দ এলাকায় বেরিয়ে ছিলাম। তখনই বিজেপি কিছু দুষ্কৃতী গাড়িতে হামলা চালায়। গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। গোটা ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছি।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির কাঁথি সংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তাপস দোলই বলেন “তৃণমূল কর্মীরা প্রচারের সময় বিজেপি কর্মীর উদ্দেশে কটুক্তি করেন। প্রতিবাদ করলে তৃণমূল কর্মীরা তেড়ে আসেন। তৃণমূল কর্মীরাই ওই গাড়িটি ভাঙচুর করে বিজেপির উপর দোষা চাপাচ্ছে। পুলিশ তিন জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।”
[আরও পডু়ন: ‘অ-হিন্দুদের প্রবেশাধিকার নেই’, দেরাদুনের ১৫০টি মন্দিরে ব্যানার ঘিরে বিতর্ক]
ঘটনা প্রসঙ্গে খেজুরি থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামলায় অভিযুক্ত তিন জনকে আটক করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী কটাক্ষ করে বলেন, “বিদায়বেলা আসন্ন বুঝতে পেরেই নখ বার করছে তৃণমূল। তাই এভাবে বিজেপির উপর হামলা করছে।”
[আরও পডু়ন: এক ফোনের অপেক্ষা, ‘দিদির ডাক’ এলেই বাংলায় প্রচারে নামতে তৈরি ‘ভাইয়া’ কেজরিওয়াল]
এদিকে, অন্য এক ঘটনায় কাঁথি উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুমিতা সিনহার সমর্থনে প্রচারে বেরিয়ে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মারিশদায় বিজেপির মিছিলকে কালো পতাকা দেখানো হয়। মারিশদা থানা এলাকার কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের জনটাই গ্রামে বিজেপির মিছিলে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। হামলায় ২ বিজেপি কর্মী আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সুমিতা সিনহা। পরে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।