সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন অবৈধভাবে ট্যাপ করার অভিযোগে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যর বিরুদ্ধে দায়ের হল মামলা। রবিবার কালীঘাট থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেছেন কসবার এক মহিলা তৃণমূল কর্মী। যে দুই বিজেপি নেতা সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রীর সেই অডিও ক্লিপ প্রকাশ করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই মূলত অভিযোগ জানিয়েছেন ওই তৃণমূল কর্মী। তাঁর অভিযোগ, অমিত মালব্য এবং লকেট চট্টোপাধ্যায় অবৈধভাবে মমতার ফোন ট্যাপ করেছেন। মহিলার অভিযোগ পেয়ে লকেট এবং অমিতের বিরুদ্ধে টেলিগ্রাফ আইন এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করেছে কালীঘাট থানার পুলিশ। শীঘ্রই শুরু হবে তদন্ত।
এর আগে শনিবারই মমতার ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নালিশ জানিয়ে এসেছে তৃণমূলের এক প্রতিনিধিদল। নির্বাচন কমিশনে দায়ের করা অভিযোগে তৃণমূলের (TMC) দাবি, মমতার ফোন বিজেপি নেতারা অবৈধভাবে ট্যাপ করছেন। এটা ‘১৮৮৫ সালের ভারতীয় টেলিগ্রাফ আইন’, ‘২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইন’ এবং ‘১৮৬০ সালের ভারতীয় দণ্ডবিধি’র বিরুদ্ধাচারণ। ফৌজদারি আইনে মামলা দায়ের করে এর তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করছে শাসকদল। তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সদস্য পূর্ণেন্দু বসুর (Purnendu Basu) প্রশ্ন,”মমতার ফোন যদি ট্যাপ না’ই হবে, তাহলে একটি রাজনৈতিক দলের কাছে কীভাবে দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের অডিও ক্লিপ পৌঁছে গেল?” কমিশনে নালিশ জানানোর আগেই অবশ্য তৃণমূলের তরফে টুইটারে ক্ষোভ উগরে দেওয়া হয়। রাজ্যের শাসক দলের তরফে বলা হয়, “কেন্দ্র কি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর ফোনের ব্যক্তিগত কথোপকথন ট্যাপ করেছে? একজন মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত পরিসরে অনুপ্রবেশ করার ও ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করার বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।”
[আরও পড়ুন: ‘অবৈধভাবে আড়ি পাতা হচ্ছে মমতার ফোনে’, অডিও কাণ্ডে কমিশনে নালিশ তৃণমূলের]
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এবং হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। যাতে শীতলকুচির তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায় মমতাকে। ক্লিপটি প্রকাশ করে গেরুয়া শিবিরের নেতারা দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন। শীতলকুচির ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজ্যের ভোটে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করারও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তারপর থেকে এই ক্লিপটিকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি।