সুমন করাতি, হুগলি: তরুণী চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ডে সুবিচারের দাবিতে কর্মবিরতিতে শামিল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা। তারই মাঝে বিনা চিকিৎসায় ওই হাসপাতালেই এক দুর্ঘটনাগ্রস্ত যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ। এবার নিজের ছেলের মৃত্যুতে সুবিচারের দাবিতে সরব সন্তানহারা মা। চোখের জল মুছতে মুছতে তাঁর একটাই প্রশ্ন, "এই ডাক্তারদের বিচার করবে কে?"
ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানান কোন্নগরের নিহত যুবক বিক্রম ভট্টাচার্যের মা। তিনি বলেন, "ছেলের পা থেকে ক্রমশ রক্ত বেরিয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছে। বার বার জিজ্ঞাসা করলাম কোনও চিকিৎসক নেই। এক ম্যাডাম বললেন, ব্যান্ডেজ করো, সেলাই করো। ডাক্তার শুধু পা-টা ব্যান্ডেজ করা। এক্স রে করাতে গেলাম। তাও পারলাম না।
অবিলম্বে চিকিৎসা দরকার। হয়নি। ছেলেটার শরীরটা চোখের সামনে সাদা হয়ে গেল। আউটডোরের একের পর এক টিকিট কাউন্টারে দৌড়লাম। কাউকে পেলাম না।"
[আরও পড়ুন: সবই সন্দীপের কৃপা! মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় এসে রকেট গতিতে উত্থান ভেন্ডর বিপ্লবের]
কান্নাভেজা চোখে নিহত যুবকের মা আরও বলেন, "ছেলেটা তো নির্দোষ ছিল। এটা কী প্রতিশোধ নিচ্ছে? আমরাও এভাবে রোগীকে হত্যা করব? যন্ত্রণা দিয়ে, কষ্ট দিয়ে মারব? ডাক্তারদের বিচার কে করবে? এর বিচার কে করবে? আমরা কী চাই না, একটা মেয়ের বিচার হোক? আমরাও তো মা। তার মায়ের তো কোল খালি হল। আমরা সবাই বিচার চাই। তা বলে আজ আমার সন্তান তো বিনা চিকিৎসায় চলে গেল। ডাক্তারদের বিচার চাই। কেন তারা চিকিৎসা করছেন না?" চোখের জলই এখন সম্বল নিহত যুবকের দিদারও।
উল্লেখ্য, কোন্নগরের বেঙ্গল ফাইন মোড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন বিক্রম ভট্টাচার্য নামে ওই যুবক। বিবেক নগর দ্বারিক জঙ্গল বাই লেনে মা ও দিদিমার সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন তিনি। শুক্রবার ভোর তাঁর দুই পায়ের উপর দিয়ে লরি চলে যায়। প্রথমে শ্রীরামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তাঁকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কার্যত বিনা চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যু হয় বলেই অভিযোগ। এই ঘটনার পরই X হ্যান্ডেলে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আর্জি জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুণাল ঘোষ।