পারমিতা কামিলা: ৭ মার্চ, ব্রিগেড সমাবেশে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রার্থী তালিকা এখনও প্রকাশ করা হয়নি গেরুয়া শিবিরের তরফে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের মতোই রাজনৈতিক মহলের চোখ রয়েছে বিজেপির তারকা প্রার্থীদের দিকেও। এই অবস্থায় রাজনীতির ময়দানে পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakraborty) বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন বিজেপিতে যাওয়া টলিউড অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) প্রার্থী তালিকায় এবার একঝাঁক নতুন মুখ তথা টলি তারকা। সেই বিষয়ে সংবাদ প্রতিদিনের তরফ থেকে রুদ্রনীলকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “রাজনীতিতে নতুন মুখ আসতেই পারে। কিন্তু বিষয়টা হল, যাঁদের কোনও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা নেই তাঁরা কেমন করে ভোটের প্রার্থী হিসাবে দাঁড়াতে পারেন? আমি বিনোদন জগতে কাজ করার কথা বলছি না। আমি বলছি, যাঁদের অতীতে কোনওরকম সমাজচিন্তা ছিল না তাঁরা এখন মানুষের কাজ কীভাবে করবেন?” তিনি আরও বলেছেন, ” বিভিন্ন এলাকায় যাঁরা এতদিন সেখানকার জনগণের জন্য কাজ করেছেন, আজ তাঁরা টিকিট পেলেন না। নতুন মুখ ভাল কিন্তু কোন মুখ? সমাজ সচেতনতা নিয়ে যাঁদের কোনও মাথাব্যথা ছিল না। এলাকার মানুষ কী চায় তা নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে দলের কোনও সমন্বয় নেই। নিজের ইচ্ছামতো তিনি সবকিছু চাপিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বিপর্যয় হতে বাধ্য।”
[আরও পড়ুন: ব্যঙ্গের ছলে তিন টুইটেই বিস্ফোরক তাপসী পান্নু, আয়কর হানা নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী]
শুক্রবার ভোটপ্রার্থীদের নাম ঘোষণার পরেই তৃণমূল (TMC) দলের অন্দরে ক্ষোভ নজরে এসেছে। হাওড়ার জটু লাহিড়ী, শীতল সর্দার, সিঙ্গুরের রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, সাতগাছিয়ার সোনালী গুহ টিকিট না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন সোনালি। রাজ্যে একাধিক জায়গাতেও প্রার্থী পদ নিয়ে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে রুদ্রনীল বলেন, ” শাসক শিবিরের তরফ থেকে বলা হয়েছে দু’বছর ধরে রিসার্চ করে তবেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাহলে কেন এত বিক্ষোভ হচ্ছে? হাওড়াতে মনোজ তিওয়ারিকে নিয়ে বা সায়ন্তিকা যে কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছে, সেই সব এলাকায় প্রতিবাদ চলছে। এতদিন ধরে পি. কে. কী কাজ করেছেন? বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। যাঁরা এতদিন দলের হয়ে, এলাকার হয়ে কাজ করে এসেছেন আজ তাঁরাই টিকিট পেলেন না। তাঁদের সম্মান ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। ফলে এটা স্পষ্ট, দলের মধ্যে সমন্বয়ের বড় অভাব রয়েছে। বিপর্যয় কড়া নাড়ছে। শাসক দলে ওয়ান ম্যান শো চলে। মানে ওয়ান উওম্যান শো হয়। যাঁর দু’তিনটে ডান হাত বাম হাত রয়েছেন। তাঁরা যা বলছেন তাই করা হচ্ছে।”
রাজনীতির ময়দানে এতদিনের বন্ধু পরিচালক রাজও আজ রুদ্রনীল ঘোষের প্রতিপক্ষ । সেই সম্পর্কে রুদ্রর স্পষ্ট বার্তা, ” রাজনীতির ময়দানে যুদ্ধ তো হবেই। আমাদের রাজনৈতির মতাদর্শ মিলবে না। একে অপরের বিরুদ্ধে ভিন্ন মতও পোষণ করব। কিন্তু এর মানে এটা নয় যে, বন্ধুত্বে কোনও রকম ফাটল ধরবে। আমাদের পোশাক, স্টাইল সবকিছু আলাদা হতে পারে। তবে একটা বিষয় আমাদের মধ্যে কমন। সেটা হল আমরা দু’জনেই চাইনিজ খেতে পছন্দ করি। মাছ-ভাত খেতে পছন্দ করি। তাই বন্ধুত্ব ভাঙার কোনও রকম আশঙ্কা নেই। তবে রাজনীতির ময়দানে, হ্যাঁ, যুদ্ধ হবেই।” যদিও এই প্রসঙ্গে পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।