সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় দর্শন মৃত্যুকে শোক হিসেবে দেখে না, বরং জীবাত্মার মুক্তি তথা পরমাত্মার সঙ্গে মিলনকে উদযাপন করা হয়। ফলে পরিপক্ক বয়সে মৃত্যুতে খোল-করতাল বাজিয়ে শ্মশানযাত্রার রেওয়াজ রয়েছে। তাই বলে প্রিয়জনের মৃত্যুর জন্য মাংস-ভাত খাওয়াতে হবে গ্রামবাসীকে! অনেকেই হয়তো এমন ঘটনা প্রথমবার শুনছেন। সম্প্রতি যা ঘটেছে ওড়িশায় (Odisha)। এমনকী গ্রামের লোকেদের দাবি অনুযায়ী মহাভোজ না খাওয়ানোয় মৃত্যুর দু’দিন পরে শেষকৃত্য হয়েছে বৃদ্ধার। ঠিক ঘটেছিল?
এই ঘটনা ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার তেলাবিলা গ্রামের। সম্প্রতি মৃত্যু হয় ৭০ বছর বয়সী সোমবারি সিংয়ের। এলাকার রেওয়াজ জন্ম এবং মৃত্যুর পর ভোজ খাওয়াতে হবে প্রতিবেশীদের। বৃদ্ধা সোমবারির মৃত্যুর পর তাঁর ছেলেদের কাছে ১০ কেজি খাসির মাংস ভোজের আবদার জানান গ্রামবাসীরা। আর্থিকভাবে দুর্বল বৃদ্ধার ছেলেরা সেই আয়োজন করতে পারছিলেন না। যদিও কোনও যুক্তিই শুনতে চাননি গ্রামের লোকেরা। ‘অন্যায় আবদার’ থেকে সরেননি তাঁরা। এর আগে দু-দুটো বিয়ে হয়ে গিয়েছে পাড়ায়, কিন্তু মেলেনি গণভোজ। অতএব, এবারে ভাল-মন্দ খেতেই হবে। এমনকী গ্রামবাসীরা জানিয়ে দেয়, খাসির মাংসের ভোজ না দেওয়া হলে বৃদ্ধার শেষকৃত্যে কেউ যাবেন না।
[আরও পড়ুন: যতকাণ্ড যোগীরাজ্যে, সরকারি টাকা হাতাতে দিদির কপালেই সিঁদুর দিলেন ভাই!]
বাস্তবেই থমকে যায় বৃদ্ধার শেষকৃত্য। দুদিন পর কোনওরকমে ধার-দেনা করে গ্রামবাসীদের খাওয়ানোর জন্য টাকা যোগাড় করেন বৃদ্ধার এক ছেল। এর পর প্রতিবেশীরাও শেষকৃত্য অংশ নিতে রাজি হন। নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় সোমবারি সিংয়ের দাহকাজ। চাপে পড়ে ভোজের ব্যবস্থা করলেও গোটা ঘটনায় বিরক্ত বৃদ্ধার বড় ছেলে। তাঁর প্রতিক্রিয়া, স্বজন হারানোর শোকের মধ্যে মাংস খাওয়ার ‘অন্যায় আবদার’ মেনে নেওয়া যায় না, এই ঘটনা অমানবিক।