সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেনা ও আধাসেনার লড়াইয়ে সুদানে মুড়ি মুড়কির মতো প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এবার সুদানের উত্তর দারফুর প্রদেশের অল ফাসেরের এক হাসপাতালে হামলা চালাল বিদ্রোহী গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)। এই হামলায় অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। গত শুক্রবার এই হামলা চালানো হলেও রবিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
![](https://mcmscache.epapr.in/mcms/434/a8a2c017e2b91afd0d2f9fd5d52ed44cbc32e704.jpg)
রবিবার এক্স হ্যান্ডেলে এই তথ্য প্রকাশ্যে এনে 'হু' প্রধান ঘেব্রিয়াসুস জানান, 'সুদানের অল ফাসেরের সৌদি হাসপাতালে ভয়াবহ হামলায় ১৯ জন আহত হয়েছেন, পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ৭০ জনের।' তিনি বলেন, এই হামলায় সময় হাসপাতালে অসুস্থদের ভিড় ছিল। সেখানেই হামলা চালানো হয়। তবে কারা এই হামলা চালিয়েছে তা নিয়ে হু প্রধান কিছু না জানালেও, স্থানীয় আধিকারিকরা জানান, হামলার পিছনে রয়েছে আরএসএফ। যদি বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের তরফে এই হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি। পাশাপাশি আহতদের বেশিরভাগেরই অবস্থা গুরুতর বলে জানা যাচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২৩ সাল থেকে গৃহযুদ্ধে উত্তপ্ত সুদান। ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমেছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীরই দুই জেনারেল- আবদেল আল ফতা আল বুরহান ও জেনারেল মহম্মদ হামদান দাগালো। প্রথম জন সুদানের সেনাপ্রধান এবং ২০১৯ থেকে দেশের সর্বোচ্চ শাসনব্যবস্থার জন্য ভারপ্রাপ্ত কাউন্সিলের প্রধান। দ্বিতীয় জন দেশের আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)-এর প্রধান তথা কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য। দুজন জেনারেলের বিরুদ্ধেই মানবাধিকার ভঙ্গ, লুটতরাজ, নৃশংসতা ও ধর্ষণে মদতের অভিযোগ রয়েছে। গত বছর এপ্রিলের ১৫ তারিখ থেকে চলা লড়াইয়ে যুযুধান দুই পক্ষের কেউই সংঘর্ষবিরতি মানছে না। রক্তক্ষয়ী ক্ষমতার লড়াইয়ে পশ্চিমের দারফুর প্রদেশে কয়েকশো মানুষ নিহত হয়েছেন। রাজধানী খারতুমেও প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। যুদ্ধের জেরে ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত।
বিবিসি সূত্রের খবর, আফ্রিকার দেশটিতে চলা এই গৃহযুদ্ধের জেরে ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই পড়শি দেশ চাদে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে, দারফুরে গণহত্যা চালাচ্ছে ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ ও তাদের সঙ্গী আরব মিলিশিয়াগুলো। অমুসলিমদের নিশানা করছে তারা। ধর্ষণকে যুদ্ধের হাতিয়ারের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। পশ্চিম দারফুরের রাজধানী এল জেনেইনায় ফৌজের সদরদপ্তর দখল করে নিয়েছে আধাসেনা। একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়ে ৮০০ জনকে হত্যা করেছে আরএসএফ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং লিবিয়ার পাশাপাশি আরএসএফ-কে রুশ ভাড়াটে যোদ্ধাবাহিনী ওয়াগনারও সহায়তা করেছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি।