সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ (British Finance Minister) অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক (Rishi Sunak)। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia Ukraine War) আবহে ব্রিটিশ সরকার নানা আর্থিক বিধিনিষেধ চাপিয়েছে রাশিয়ার উপরে। রাশিয়ার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে ব্রিটিশ সরকারের (Russia-UK) তরফ থেকে। এহেন পরিস্থিতিতে ঋষি সুনকের সঙ্গে ভারতীয় সংস্থা ইনফোসিসের (Infosys) যোগসূত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। ঋষির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রাশিয়ার কাছ থেকে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্রসঙ্গত, ঋষি সুনক হলেন ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির জামাই।
রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ইনফোসিসের। ঋষির স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি ইনফোসিসের অন্যতম অংশীদার। এক ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঋষি জানিয়েছেন, “আমি কোনওভাবেই ইনফোসিসের সঙ্গে যুক্ত নই।” তাঁকে ইনফোসিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়, ব্রিটেন তো রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক বিধিনিষেধ চপিয়েছে। দেশের নাগরিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে কোনওরকম আর্থিক সম্পর্ক যেন না রাখা হয়। সেখানে অর্থমন্ত্রী হয়ে তিনি কি নির্দেশ অমান্য করছেন না? এই প্রশ্নের জবাবে ঋষি জানান, “আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে এই সাক্ষাৎকার দিতে এসেছি। আমার যা দায়িত্ব শুধু তা নিয়েই আমি কথা বলব। আমার স্ত্রী জনপ্রতিনিধি নন।”
[আরও পড়ুন: Russia-Ukraine War: ইউক্রেন দখল করতে হবে এই তারিখের মধ্যে, ডেডলাইন বেঁধে দিলেন পুতিন!]
মস্কোয় ইনফোসিসের অফিস আছে এবং রুশ ব্যাংক আলফার সঙ্গেও ভাল যোগাযোগ রয়েছে এই ভারতীয় সংস্থার। এই তথ্যগুলি ঋষির সামনে তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক। তারপরেই ঋষির দিকে প্রশ্ন ধেয়ে আসে, ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) দেশ থেকে তিনি কি আর্থিক ভাবে লাভবান হননি? কিন্তু ঋষির তরফ থেকে সদর্থক জবাব পাওয়া যায়নি। তিনি এই প্রশ্নের উত্তরে শুধু বলেন, “আমি মনে করি না আপনি যা বলছেন তা সঠিক ।”
ইনফোসিসের তরফ থেকেও এই প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, “রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাতে (Russia Ukraine Crisis) আমরা শান্তির পক্ষে সওয়াল করছি। রাশিয়ায় খুব কম সংখ্যায় ইনফোসিসের কর্মীরা নিযুক্ত আছেন। তাঁরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিছু ক্লায়েন্টকে পরিষেবা দেন।” রাশিয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে তাদের কোন যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছে ইনফোসিস। রাশিয়ার স্থানীয় সংস্থাগুলির সঙ্গেও তাদের কোনও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নেই বলেও জানিয়েছে ইনফোসিস। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে (Russia-Ukraine Conflict) মানুষের কাছে পরিষেবা পৌছে দেওয়া তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য বলেই দাবি করা হয়েছে ইনফোসিসের পক্ষ থেকে। যদিও ঋষি সুনককে নিয়ে আলাদা কোনও মন্তব্য করেনি ইনফোসিস।
ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন ঋষিই। বরিস জনসনের ব্যর্থতার পরে এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছিল ইংল্যান্ডের রাজনৈতিক মহলে। রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে ঋষির, এই গুঞ্জনের পরে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, সেদিকেই নজর গোটা দেশের।