সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রক্তমেঘে ঢেকেছে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ। লড়াই থামার নাম নেই গাজায়। হামাসের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে ভয়ংকর হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েলি সেনা। তবে কয়েকদিন আগে যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী ইজরায়েলের অন্ধকার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন গাজার ৫ বাসিন্দা। কিন্তু এতদিন তাঁরা ইজরায়েলি সেনার নৃশংস অত্যাচারের শিকার হয়েছেন! যৌন নির্যাতন, ইলেকট্রিক শক থেকে শুরু করে গায়ে রাসায়নিক ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার মতো আরও কী কী করা হয়েছে, ঘরে ফিরে সেই দুঃস্বপ্নময় অভিজ্ঞতা শোনালেন তাঁরা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। প্রাণ হারান হাজারের উপর মানুষ। জেহাদিরা দুশোর উপর মানুষকে বন্দি বানিয়ে নিয়ে যায়। যার প্রতিশোধ নিয়ে গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইজরায়েল। সেই সময় বহু প্যালেস্টিনীয়কেও গ্রেপ্তার করে ইজরায়েলি ফৌজ। ধৃতদের রাখা হয় বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্প ও সেনা ব্যারাকে। অভিযোগ, সেখানেই বন্দিদের উপর অকথ্য অত্যাচার করা হত।
যেমন ইহুদি দেশটির কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ৩৬ বছরের মহম্মদ আবু তাওয়িলেহ বিবিসিকে জানান, "আমাকে প্রথমে বেধড়ক মারধর করা হয়। তারপর আমার গায়ে একটা রাসায়নিক ঢেলে দেওয়া হয়। যার থেকে আমার শরীরে আগুন লেগে যায়। আমি সেই আগুন নেভানোর জন্য পশুর মতো ছুটে বেরিয়েছি।" অন্যান্য বন্দিরা জানান, "ইজরায়েলি সেনা সন্দেহ করেছিল যে আমরা হামাসের সঙ্গে যুক্ত। ইজরায়েলের পণবন্দিদের কোথায় রাখা হয়েছে, হামাসের টানেল এই সব কিছু নিয়ে আমাদের নানা প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু আমরা এই সবের কিছুই জানি না।"
সাক্ষাৎকারে গাজার ওই বাসিন্দারা আরও জানান, "আমাদের বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হত। কুকুর দিয়ে ভয় দেখানোও হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়লেও আমাদের চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। শুধু তাই নয়, কয়েকজন বন্দির উপর যৌন নির্যাতন চালাতে দেখেছি আমরা। একজনের মাথা রাসায়নিক পদার্থে চোবানো হয়েছিল এবং শরীরের পিছনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আমরা চোখের সামনে অন্য বন্দিদের মরতে দেখেছি।" এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে আসতেই ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে একাধিক মানবাধিকার সংঠন।