সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নামেই আলোচনা চলছে যুদ্ধবিরতি নিয়ে। ইউক্রেনে হামলার ধার এতটুকু কমায়নি রাশিয়া। রবিবার ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বের শহর সুমিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ ফৌজ। যার জেরে কার্যত নরকে পরিণত হয়েছে শহরটি। এখনও পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে ৩৪ জনের। আহত শতাধিক। রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মৃতদেহ। ভেঙে পড়েছে একের পর এক বহুতল। রাশিয়ার হামলার পর ধবংসের এই ছবি দেখার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইউক্রেনে আসার ডাক দিলেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে তিনি বলেন, "আসুন দেখে যান পুতিন কী হাল করেছে আমাদের।"

এই মুহূর্তে আমেরিকার মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের শান্তি আলোচনা চলছে। যুযুধান দু'দেশই লড়াই থামাতে শর্তসাপেক্ষে রাজি হয়েছে। কিন্তু এই আলোচনার মাঝেও যুদ্ধের ঝাঁজ কমেনি। সুমি শহরে ভয়াবহ রুশ হামলার পর ট্রাম্পকে কিয়েভে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমি চাই, যুদ্ধজর্জর এলাকাগুলো এসে দেখে যান ট্রাম্প। তিনি দেখুন পুতিন কী হাল করেছে। দয়া করে বোঝার চেষ্টা করুন পুতিন কী করছে, কী চায়। কোনও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, কোনও রকম সমঝোতার পথে হাঁটার আগে এখানে এসে নিরীহ মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। নিজের চোখে হাসপাতাল, চার্চগুলোর দশা দেখুন। নিষ্পাপ শিশুগুলোর মুখের দিকে তাকান।" জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সুমিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪ জন। মৃতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। আহতের সংখ্যা ১১৭।
রাশিয়ার এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, "ট্রাম্পের সমস্ত কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করছেন পুতিন।" নিন্দা করে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, "এই হামলা ভয়ংকর। কাপুরুষের মতো আক্রমণ করা হয়েছে।" দ্রুত যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারও। এদিকে, রাশিয়ার এই হামলা নিয়ে মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, "সাধারণ মানুষের উপর এহেন আক্রমণ ভয়ংকর। রাশিয়াকে এর জবাব দিতে হবে।" ফলে এবার মস্কোর বিরুদ্ধে তিনি আদৌ কোনও পদক্ষেপ করেন সেদিকেই নজর ওয়াকিবহাল মহলের
প্রসঙ্গত, দু'দিন আগেই শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ। ট্রাম্পও এই বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা প্রক্রিয়া যখন ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময়ে এই হামলা প্রশ্ন তুলছে রাশিয়া কী আদৌ শান্তি চায়? কবে থামবে এই মৃত্যুমিছিল? এই উত্তরগুলো এখনও অধরা।