সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাত বছরের প্রাচুর্য্যের পর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমেছিল প্রাচীন মিশরে। একমুঠো অন্নের জন্য ক্ষুধার্ত জনস্রোত ছুটে গিয়েছিল সর্বশক্তিমান ফারাওয়ের প্রাসাদে। তবে সেখান থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয় তাদের। শেষে ত্রাতার ভূমিকা নিয়ে মিশরীয়দের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন ঈশ্বরের দূত জোসেফ। বাইবেলের এই গল্প প্রায় সবারই জানা। ওল্ড টেস্টামেন্টে ওই দুর্ভিক্ষের বর্ণনা পড়লে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। এবার তেমনই বিপদ ডেকে আনতে চলেছে করোনা। এমনটাই জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।
[আরও পড়ুন: যায় যায় অবস্থা কিমের! উত্তর কোরিয়ার মসনদে বসতে পারেন বোন কিম ইও]
রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে, করোনা মহামারি শেষ হলেই অপেক্ষা করছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ৷ ইতিমধ্যে বিশ্বের একটা বড় অংশে খাদ্যাভাব শুরু হয়ে গিয়েছে৷ এবং খুব শীঘ্রই তা দুর্ভিক্ষের আকার নেবে৷ কিছু অঞ্চলে ইতিমধ্যেই দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে৷ অবিলম্বে পদক্ষেপ না করলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সাক্ষী থাকবে বিশ্ববাসী৷ বহু মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবে৷ রাষ্ট্রসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম-এর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ডেভিড বিসলের বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এবার মানব সভ্যতা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে৷ সিরিয়া, ইয়েমেন-সহ একাধিক দেশে যুদ্ধ, আফ্রিকায় পঙ্গপালের হানা, লেবানন, কঙ্গো, সুদান ও ইথিওপিয়ায় একের পর এক প্রাকৃতি দুর্যোগ ও অর্থনৈতিক মন্দা, তার সঙ্গে করোনা মহামারি বিশ্বকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷” তিনি আরও জানান, বিশ্বে প্রায় ৮৩ কোটি মানুষ রাতে চরম খিদের জ্বালা নিয়ে ঘুমোতে যায়৷ সাড়ে ১৩ কোটি মানুষ প্রায় খেতেই পাচ্ছে না৷ করোনার জেরে ২০২০ সালের শেষে আরও ১৩ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে৷ ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামে ১০ কোটি মানুষের কাছে খাবার পৌঁছচ্ছে৷ ৩ কোটি মানুষ তো এই প্রকল্পের উপরেই বেঁচে আছে৷
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ছিলেন ডেভিড বিসলে স্বয়ং। তবে মারণ রোগকে হারিয়ে ফের লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। তাঁর এহেন সতর্কবার্তায় রীতিমতো অশনিসংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনিতেই লকডাউনের জেরে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুর ও পরিযায়ী শ্রমিকরা অথৈ জলে। একধাক্কায় তলানিতে ঠেকেছে বিশ্বের জিডিপি বৃদ্ধির হার। ফলে এখনই পরিস্থিতি সামাল দিতে পদক্ষেপ না করা হলে দুর্ভিক্ষ থামনো যাবে না বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এদিকে, উদ্বেগ বাড়িয়ে সদ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (World Health Organization) জানিয়েছে, সহজে বিদায় নেওয়ার মতো ভাইরাস নয় COVID-19। দীর্ঘদিন এর বিরুদ্ধে লড়াই করেই বাঁচতে হবে। WHO-এর মতে, বিশ্বব্যাপী লকডাউনের জেরে বহু দেশেই সংক্রমণের গতি কমানো গিয়েছে। তবে আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। লকডাউন তুললে ফের বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে যেতে পারে সংক্রমণের গতি।
[আরও পড়ুন: করোনা যোদ্ধা ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা ডাক্তারকে অভিনবভাবে কুর্নিশ জানাল আমেরিকা]
The post বাইবেলের সেই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখবে পৃথিবী, করোনা আবহে সতর্কবার্তা রাষ্ট্রসংঘের appeared first on Sangbad Pratidin.
