সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদেশ মন্ত্রকের সচিব বিক্রম মিসরির চিন সফরে বরফ গলল। গত বেশ কয়েক বছর ধরে বন্ধ থাকা কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিল ভারত-চিন। পুণ্যার্থীদের জন্য সরাসরি বিমানযাত্রার বিষয়েও কথা হয়েছে উভয়পক্ষের মধ্যে। উল্লেখ্য, ২০২০ সাল থেকে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা বন্ধ রয়েছে। নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ।
সম্প্রতি দুদিনের চিন সফরে সে দেশের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। এরপরই পুণ্যার্থীদের জন্য সুখবর দিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হল---"২০২৫ সালের গ্রীষ্মেই কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রায় রাজি হয়েছে দুই দেশ। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার বিষয়ে একমত হয়েছে দুপক্ষ। কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রার পাশাপাশি দুই দেশের সীমান্তবর্তী নদীগুলিতে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের আলোচনাতে সম্মত হয়েছে ভারত-চিন। " উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে রাশিয়ার কাজন শহরে এক বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে তারই ফলশ্রুতি কৈলাস-মানস নিয়ে ভারত-চিনের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।
প্রত্যেক বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভারত থেকে তিব্বতের মানস সরোবরে যাত্রা করে থাকেন ভারতীয় পুণ্যার্থীরা। প্রায় প্রতিবছরই শ’য়ে শ’য়ে পুণ্যার্থী যান কৈলাসে। বিদেশমন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে এই পূণ্যযাত্রা৷ মূলত নাথু লা ও লিপুলেখ পাসের মাধ্যমে ভারত থেকে তিব্বতে প্রবেশ করেন পূণ্যার্থীরা। তারপর কড়া নিরাপত্তা বলয়ে তাঁদের কৈলাস পর্যন্ত নিয়ে যায় চিনা প্রশাসন। মূলত নেপালের বিভিন্ন ট্র্যাভেল এজেন্সি পর্যটকদের কৈলাস নিয়ে যায়।
কিন্তু ২০২০ সালে কোভিড অতিমারীর কারণে এই যাত্রা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর গালওয়ান সংঘাতের জেরে ব্যাপক অবনতি ঘটে ভারত-চিন সম্পর্কে। দুই কারণেই ২০২৩ সাল পর্যন্ত বন্ধ থাকে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা। তবে গত বছর প্রচুর কড়াকড়ি চাপিয়ে চিনের তরফে এই যাত্রা শুরুর প্রস্তাব দেওয়া হয়। ফলে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায় যাত্রার খরচ। এত খরচের ধাক্কা সামলে ভারতীয় পুণ্যার্থীদের পক্ষে যাত্রা করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। মনে করা হচ্ছে এবারে পুণ্য়ার্থীদের সমস্যার দিকটি নিয়েও উভয়পক্ষের কথা হবে। উল্লেখ্য, ২০২৫ সালে ভারত-চিন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে।