সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ৯ বছর বয়সেই বিয়ে দেওয়া যাবে মেয়েদের। খুব শীঘ্রই এমন আইন কার্যকর হতে চলেছে ইরাকে! সম্প্রতি মেয়েদের বিয়ের আইনি বয়স ১৮ বছর কমিয়ে ৯ করা নিয়ে প্রস্তাব আনা হয়েছিল। যার পরে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন সেদেশের মহিলারা। হয় বিক্ষোভ-প্রতিবাদও। কিন্তু তাতে কোনও কর্ণপাত করেনি কট্টরপন্থী শিয়া সরকার। উলটে নতুন এই আইন চালু হলে থাকবে না মহিলাদের বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার, এমনকি সন্তানদের উপরে থাকবে না অধিকারও। সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারও দাবি করতে পারবে না তাঁরা।
জুলাই মাসের শেষের দিকে বিয়ের আইনি বয়স কমানো নিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ হয় ইরাকের পার্লামেন্টে। সেখানে বলা হয়েছে, মেয়েদের বিয়ের নূন্যতম বয়স এবার থেকে ৯ বছর হবে। কমিয়ে দেওয়া হবে ছেলেদের বিয়ের বয়সও। ১৫ বছর বয়স হলেই আইনিভাবে বিয়ে করতে পারবে ছেলেরা। ইরাক সরকারের মতে, অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া আটকানোর জন্যই এই প্রস্তাব আনা হয়। তবে সেবার সাংসদদের প্রবল আপত্তিতে এই প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় ইরাক সরকার। কিন্তু বিতর্কিত ওই প্রস্তাবে সমর্থন জানান ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া ধর্মগুরুরা। দেশের পার্লামেন্টেও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে তাঁদের। এই ধর্মগুরুদের সমর্থন নিয়েই ফের গত আগস্ট মাসে পার্লামেন্টে পেশ হয় বিতর্কিত প্রস্তাব। জানা গিয়েছে, সংসদে এই প্রস্তাব পাশ আর মাত্র কিছু সময়ের অপেক্ষা। দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব দেশে আইন চালু করতে চায় সরকার।
সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি নয়া আইনের খসড়ার দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, মেয়েদের বিয়ের বৈধ বয়স কমিয়ে ৯ বছর করা হবে। ছেলেদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স হবে ১৫। বিবাহ বিচ্ছেদের কোনও অধিকার থাকবে না মহিলাদের। গার্হস্থ্য ঝামেলা থেকে শুরু করে নানা বিষয় স্বামীর মতামতকেই প্রাধান্য দিতে হবে স্ত্রীকে। থাকবে না সন্তানের উপরে অধিকার। সম্পত্তির উত্তরাধিকার হতে পারবেন না মহিলারা।
এছাড়াও খসড়ায় বলা হয়েছে, পারিবারিক সমস্যা মেটানোর জন্য আদালত মধ্যে ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কোনও একটি বেছে নিতে হবে দেশের নাগরিকদের। এই প্রস্তাব নিয়ে সরব বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, সমাজে মেয়েদের অধিকার সম্পূর্ণ খর্ব করতেই এই আইন কার্যকর করতে চায় সরকার। উল্লেখ্য, ইসলামি আইন বিলুপ্ত করা হয় ১৯৫৯ সালে। কিন্তু নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী ইরাকে আবার ফিরতে চলেছে ইসলামি আইনের শাসন। ইউনিসেফের মতে, আইন থাকা সত্ত্বেও ইরাকের ২৮ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছরের আগেই। এহেন পরিস্থিতিতে যদি নতুন করে আইন পাশ হয় তাহলে মহিলাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে উঠবে। নারীমৃত্যু, গার্হস্থ্য হিংসার মতো সমস্যাও আরও বাড়বে।