সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার সম্মুখ সমরে ইজরায়েল-ইরান! তেল আভিভের হামলায় লেবাননে প্রাণ গিয়েছে হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লার। তাঁর মৃত্যুর ‘বদলা’ নিতে ইহুদি দেশটিতে ভয়ংকর হামলা চালিয়েছে তেহরান। গোটা ইজরায়েল জুড়ে আছড়ে পড়ে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল। পালটা ইরানকে মূল্য চোকানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে দিয়েছে তেল আভিভ। কিন্তু নিজের অজান্তেই নাকি শান্তির পথ বন্ধ করেছে ইজরায়েল। কারণ যুদ্ধ থামানোর পথে হাঁটতে চেয়েছিলেন নাসরাল্লা! সেই প্রস্তাব দেওয়ার আগেই তাঁকে নিকেশ করে দেয় ইজরায়েলি সেনা। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন লেবাননের বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লাহ রশিদ বাউ হাবিব।
গত জুলাই মাস থেকে সংঘাত তীব্র হয়েছে ইজরায়েল ও হেজবোল্লার(Israel-Hezbollah Conflict) মধ্যে। ইজরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির এক ফুটবল স্টেডিয়ামে আছড়ে পড়ে জঙ্গি সংগঠনটির রকেট। হামলায় মৃত্যু হয় ১২ জনের। এই ঘটনাতেই আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে লেবাননে আক্রমণের ধার বাড়ায় ইজরায়েল। ২৭ সেপ্টেম্বর ইজরায়েলি সেনার অভিযানে নিকেশ হন নাসরাল্লা। হামলার সময় লেবাননের রাজধানী বেইরুটের দক্ষিণে দহিয়ার একটি বহুতলের নিচে বানানো বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। হেজবোল্লার কয়েকজন শীর্ষনেতার সঙ্গে আলোচনা চলছিল তাঁর। মাটির কয়েক ফুট নিচে থাকা সেই বাঙ্কারকে চিহ্নিত করে ইজরায়েলি সেনা। তার পর সেই বহুতলের উপর একের পর এক বোমাবর্ষণ করে তারা।
এই ঘটনা নিয়েই বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখী হন লেবাননের বিদেশমন্ত্রী হাবিব। তাঁর দাবি, "লেবাননে হামলা শুরু হওয়ার পর রাষ্ট্রসংঘে যুদ্ধবিরতির ডাক দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। আমরা তাতে রাজি ছিলাম। হেজবোল্লার সঙ্গে আলোচনার পরই লেবানন যুদ্ধবিরতির কথা জানাত। হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লাও শান্তির পথে হাঁটতে চেয়েছিলেন। ২১ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব দেওয়ার আগেই ইজরাইয়েলি সেনার হামলায় প্রাণ গেল তাঁর।" এখানেই প্রশ্ন উঠছে, এর বিষয়ে কি কিছুই জানত না ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থাগুলো। শত্রুপক্ষের গতিবিধির উপর সব সময়ই তীক্ষ্ণ নজর থাকে তাদের। এই মুহূর্তে ইজরায়েলের 'খতম তালিকায়' রয়েছেন ইরানের ‘সর্বশক্তিমান’ আয়াতুল্লা আলি খামেনেইর নাম। এই পরিস্থিতিতে গোপন আস্তানায় লুকিয়ে পড়েছেন ইরানের সুপ্রিম লিডার। কীভাবে ইরানের হানবে ইজরায়েল?
বিবিসির আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ফ্র্যাঙ্ক গার্ডেনারের কথায়, এখন আর আলোচনার মুডে নেই ইজরায়েল। এক সঙ্গে লেবানন, গাজা, ইয়েমেন এবং সিরিয়ায় হেজবোল্লার মতো 'জায়নবাদ'-এর শত্রুদের নিকেশ করতে বদ্ধপরিকর তারা। শুধু তাই নয়, ইরানের কি প্রত্যাঘাত করা হবে? কখন চালানো হবে অভিযান? সে সমস্ত প্রশ্ন এখন তেল আভিভের নীতি নির্ধারকদের কাছে গৌণ। তাদের পরিকল্পনা এখন একটাই, খামেনেইয়ের দেশে কতটা ভয়ংকরভাবে হামলা চালানো যায়। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত কোন ভয়ংকর রূপ নেয় তা নিয়েই আতঙ্কে আন্তর্জাতিক মহল।