সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল দেশ: ভেন্টিলেশনে রয়েছেন ছুরিকাহত সলমন রুশদি। গলা ও মাথায় একাধিক আঘাত রয়েছে তাঁর। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা অস্ত্রোপচারে সাড়া দিলেও তাঁর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে। আরও বেশ কিছুদিন হাসপাতালে থকতে হবে ওই বর্ষীয়ান লেখককে।
শুক্রবার নিউ ইয়র্কে ভাষণ দিতে গিয়ে ছুরিকাহত হন সলমন রুশদি। দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর লেখক তথা বুকারজয়ী লেখককে। হামলাকারীকে আটক করে পুলিশ। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানায়, নিউ ইয়র্কের চাউটাউকুয়া ইন্সটিটিউশনে ভাষণ দিতে পৌঁছন রুশদি। ঠিক ছিল সেখানে ‘আমেরিকায় শরণার্থী লেখকেরা’ বিষয়ের উপর প্রখ্যাত সাহিত্যিকের সঙ্গে কথা বলবেন সঞ্চালক হেনরি রিস ৷ আলোচনা হওয়ার কথা ছিল আগামী বছর প্রকাশ্যে আসতে চলা রুশদির উপন্যাস ‘ভিক্ট্রি সিটি’ নিয়েও৷ কিন্তু সে সব অধরাই থেকে যায়৷ মঞ্চে আসতেই তাঁর দিকে তেড়ে যায় এক ব্যক্তি। এই অতর্কিত আক্রমণে স্তম্ভিত হয়ে যান সকলেই। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে রুশদিকে উপর্যুপরি ছুরির আঘাত করে ওই ব্যক্তি। তাঁকে কিল-চড়ও মারে হামলাকারী। এদিকে, সম্বিত ফিরে পেয়েই হামলাকারীকে ধরে ফেলেন সেখানে উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষীরা। রুশদিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ফের ভাঙবে পাকিস্তান! বিশ্বজুড়ে ‘স্বাধীনতা দিবস’ পালন প্রবাসী বালোচদের]
এদিন রুশদির বুক এজেন্টকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, ভেন্টিলেশনে রয়েছেন ছুরিকাহত সলমন রুশদি। গলা ও মাথায় একাধিক আঘাত রয়েছে তাঁর। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা অস্ত্রোপচারে সাড়া দিলেও তাঁর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আরও বেশ কিছুদিন হাসপাতালে থকতে হবে ওই বর্ষীয়ান লেখককে। এদিকে, রুশদির উপর এহেন হামলার ঘটনায় নিন্দার ঝড় বয় গিয়েছে বিশ্বজুড়ে। প্রতিবাদে সরব হয়েছে সাহিত্যিক মহল। রুশদির দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জো বাইডেন।পুলিশ জানিয়েছে, ২৪ বছর বয়সি আক্রমণকারী হাদি মাটার নিউ জার্সির ফেয়ারভিউ-এর বাসিন্দা ৷ ঘটনাস্থলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ৷ আক্রমণের কারণ এখনও জানা যায়নি ৷ তবে অনুমান করা হচ্ছে তাঁর সঙ্গে ইরানের যোগসূত্র আছে ৷
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয় সলমান রুশদির বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’। তারপরই ইসলামিক মৌলবাদীদের রোষের মুখে পড়েন তিনি। মৌলবাদীদের অভিযোগ, রুশদির এই রচনায় ইসলাম ও মহম্মদকে অপমান করা হয়েছে। বইটি বাজারে আসতে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে রুশদিকে হত্যার ফতোয়া জারি করেন ইরানের প্রয়াত সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা রুহুল্লা খোমেইনি। রুশদির হত্যাকারীকে ৩০ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। অবশ্য বর্তমানে এই ফতোয়ার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করে ইরানের প্রশাসন।