সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমশই বেলাগাম হচ্ছে 'বাণিজ্যযুদ্ধ'। ভারত, ব্রিটেন, চিন, অস্ট্রেলিয়ার মতো একের পর এক দেশের উপর শুল্ক চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁকে পালটা দিতে অন্য কোনও রাষ্ট্র এখনও পদক্ষেপ করেনি। কিন্তু 'পালটা মার' দিয়ে দিয়েছে চিন। তারা যে চুপ বসে থাকবে না, সেই হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্টের থেকে বদলা নিতে আমেরিকার সমস্ত পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ আরোপ করেছে শি জিনপিংয়ের দেশ। এই প্রসঙ্গে নিন্দা করে ট্রাম্প বললেন, 'ওরা ভয় পেয়েছে। ভুল খেলায় নেমেছে।'
গতকাল শুক্রবার জানা যায়, আমদানি করা সমস্ত মার্কিন পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চিন। শুধু তাই নয়, ১৬টি মার্কিন সংস্থাকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের উপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে বেজিং। এছাড়া সাতটি দুর্লভ ধাতুর রপ্তানিতেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক। এতেই ক্ষান্ত না দিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য (WTO) সংস্থায় আমেরিকার বিরুদ্ধে মামলা করতে চলছে তারা। এর ফলে বিপদে পড়বে আমেরিকার বহু ব্যবসায়ী। প্রভাব পড়বে মার্কিন অর্থনীতিতেও।
এদিনই মুখ খোলেন ট্রাম্প। বেজিংয়ের এহেন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'চিন ভুল খেলা খেলছে। ওরা আসলে ভয় পেয়ে গিয়েছে। আর কিছুই নয়। আমার রাজনীতি কোনও দিন বদলাবে না। এটাই সময় বড়লোক হওয়ার।' তিনি এও বলেন যে, 'চিন তো আমাদের থেকে ৬৭ শতাংশ কর নেয়। কিন্তু আমরা ওদের পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্কই আরোপ করেছি।' প্রসঙ্গত, আমেরিকা যে যে দেশের উপর নয়া শুল্ক আরোপ করেছে তার মধ্যে চিনই প্রথম দেশ যারা পালটা কর চাপিয়ে ট্রাম্পের উপর ‘প্রতিশোধ’ নিল। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে বাদ দিয়ে চিন, ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন দেশের উপর নয়া শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। বাদ দেননি ‘বন্ধু’ ভারতকেও। নয়াদিল্লির উপর ২৬ শতাংশ কর চাপিয়েছেন তিনি।
গত বছরের নভেম্বরে নির্বাচন জিতে ফের আমেরিকার মসনদে বসেন ট্রাম্প। আর ক্ষমতায় ফিরেই তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, যে দেশ আমেরিকার পণ্যে যতটা শুল্ক চাপিয়ে থাকে, ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যে পালটা তার উপযুক্ত শুল্ক চাপানো হবে। সেই মতোই গতকাল বুধবার ভারতীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ (আমেরিকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টেয়)‘পারস্পরিক শুল্ক’ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর পরের দিনই অর্থাৎ বিবৃতি দিয়ে চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক বলে, অবিলম্বে এই শুল্ক বাতিল করতে হবে আমেরিকাকে। না হলে বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিপন্ন হবে। এইভাবে বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জয়ী হতে পারে না। এর মূল্য চোকাতে হবে আমেরিকাকে। কিন্তু এই 'শুল্কযুদ্ধে'র প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। যা আগামী দিনের জন্য অশনি সংকেত বলেই সতর্ক করেছেনম বিশেষজ্ঞরা।