সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: পুতিনের গালে স্নেহের পরশ ছুঁইয়ে দিচ্ছেন হিটলার। পিছনে যুদ্ধের কালো ধোঁয়া। ইউক্রেনে (Ukraine) রাশিয়ার সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার পর এই ছবি টুইট হল ইউক্রেনের সরকারি হ্যান্ডেলে। ঘণ্টাখানেক বাদে লেখা হল, ‘দিস ইজ নট এ মিম, বাট আওয়ার অ্যান্ড ইওর রিয়ালিটি রাইট নাও।’অর্থাৎ, ‘এটি কোনও ব্যঙ্গ নয়। আমার আপনার বর্তমান রূঢ় বাস্তব।’
মুহূর্তের মধ্যেই নেট নাগরিকদের দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল ছবিটি। কেউ বুঝে, কেউ বা না বুঝে শেয়ার করলেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, ইউক্রেনের তরফে ছোট্ট যে বার্তাটি দেওয়া হল, তা কতটা সত্যি?
[আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল শেষ প্রতিরোধ! ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ঢুকল রুশ বাহিনী]
রক্তক্ষয়ী ইতিহাসের সেই ভয়াবহ কালো দিনগুলির পাতা বুকফাটা চিৎকার করে তারস্বরে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলে, ৩৯ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিন যদি অ্যাডলফ হিটলার পোল্যান্ড আক্রমণ না করতেন, তাহলে দেখতে হত না মানবসভ্যতার ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ছ’টি বছর। ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে কি হিটলারের খুলে রাখা জুতোতেই পা গলালেন না ভ্লাদিমির পুতিন? বাঘের সঙ্গে খেলা করতে অভ্যস্থ রাশিয়ান সর্বাধিনায়ক কি কোটি কোটি মানুষের জীবন নিয়ে মারনখেলা শুরু করে দিলেন না? ক্রিমিয়া, ডনবাসের পর কিয়েভ দখল করার পিছনে কি কোথাও লুকিয়ে নেই বিভিন্ন প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ সম্পদের দখল নিয়ে নিজেকে দুনিয়ার সর্বোত্তম করে তোলার উদগ্র ইচ্ছা? সেক্ষেত্রে এত সহজেই কি থামবেন পুতিন? নাকি নতুন সাম্রাজ্যবাদের পাঞ্চজন্যে ফুঁ দিয়ে দিলেন সত্তরের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে থাকা এক ‘হিংস্র’, ‘ধুর্ত’, ‘স্বৈরাচারি’ রাষ্ট্রপ্রধান? এই ধরনের প্রশ্নই ঘুরপাক হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধ থামিয়ে আলোচনায় রাজি রাশিয়া-ইউক্রেন দু’পক্ষই! কিন্তু কোন শর্তে?]
উত্তর দেবে সময়। তবে তার আগে কোভিডে ক্ষতবিক্ষত মানবজাতির আর কতো ক্ষতি হবে, সেই সিঁদুরে মেঘের কথা ভেবেই এখন কেঁপে কেঁপে উঠছে তামাম দুনিয়া। তাই হিটলার-পুতিনের এই ছবিটি দেখে ‘মিম’ নয়, হাড়হিম হয়ে যাচ্ছে বিশ্ববাসীর।