সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরেই আমেরিকাজুড়ে ‘অনুপ্রবেশকারী হঠাও অভিযান’ শুরু করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাদ যাচ্ছে না গুরুদ্বারের মতো ধর্মীয় স্থানও। 'অবৈধ্য' অভিবাসীদের পাকড়াও করতে নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সির মতো শহরের গুরুদ্বারাতে হানা দিয়েছে পুলিশ। নির্বাচনী প্রচার থেকেই ট্রাম্প হুঙ্কার দিয়েছিলেন, আমেরিকা শুধু আমেরিকানদের। ক্ষমতায় এলে ‘অনুপ্রবেশকারী’দের নিজেদের দেশে পাঠাতে কড়া পদক্ষেপ করবেন। সেই মতোই শুরু হয়েছে ধরপাকড়।
প্রায় এক সপ্তাহ হয়েছে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ট্রাম্প। কড়াভাবে তাঁর আদেশ পালন করছে পুলিশ-প্রশাসন। পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির গুরুদ্বারগুলোতে 'অনুপ্রবেশকারী'দের খুঁজতে অভিযান শুরু করেছে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)। এনিয়ে দপ্তরের সচিব বেঞ্জামিন হুফম্যান প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিধি বদলে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন। আগের নিয়ম অনুযায়ী, স্পর্শকাতর এলাকায় ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টম্স এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এবং কাস্টম্স অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) দপ্তরের আধিকারিকদের প্রবেশের অধিকার ছিল না। কিন্তু এখন নতুন নিয়মের আওতায় তাঁদের এই ধরনের জায়গায় তল্লাশি চালানোর অনুমতি রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই কদিনে শয়ে শয়ে 'অনুপ্রবেশকারী'কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধের খুন, ধর্ষণের মতো অভিযোগ রয়েছে। আইন প্রণয়নকারীদের আশঙ্কা, এই গুরুদ্বারগুলো শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আখড়া হতে পারে। তাই এই অভিযান। সেখানে তল্লাশি চালালে হদিশ মিলতে পারে বেশ কয়েক জন 'অনুপ্রেবেশকারী'দেরও। কিন্তু এই ধরপাকড় শুরু হতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। ক্ষোভ উগরে দিয়েছে আমেরিকার শিখ সংগঠনগুলোও। প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের দাবি, এই ঘটনায় শিখদের ধর্মীয় স্থানের পরিত্রাতা নষ্ট হচ্ছে।
দিন তিনেক আগেই জানা গিয়েছিল ৫৩৮ জন ‘অনুপ্রবেশকারী’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আমেরিকায়। তাদের একটা বড় অংশকে বের করে দেওয়া হয়েছে দেশ থেকে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে সন্দেহভাজন কয়েকজন জঙ্গি। যার মধ্যে চারজন আবার সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ট্রেন ডি আরাগুয়ার সদস্য। এছাড়া সংখ্যালঘুদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে এমনও বেশ কয়েকজন রয়েছে ধৃতদের তালিকায়। এই গ্রেপ্তারির তথ্য জানান হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিয়াভিট। দেশের সুরক্ষার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন কীভাবে কাজ করছে তার উদাহরণ হিসাবে এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়, ‘শয়ে শয়ে অনুপ্রবেশকারীকে সামরিক বিমানে আমেরিকার বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিহাসে সব থেকে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ অভিযান এই মুহূর্তে চলছে। ট্রাম্প প্রশাসন কথা দেয়। কথা রাখে। আমাদের দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচন জিতে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প। গত ২০ জানুয়ারি আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়ে তিনি বলেছিলেন, আমেরিকার সোনালি যুগের শুরু। তারপর থেকে ক্ষমতায় ফিরে একের পর এক আদেশনামায় সই করে যাচ্ছেন তিনি। সূত্রের খবর, আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই তাঁর সমস্ত আদেশ কার্যকর হবে।