সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাবিপদে পড়তে চলেছেন ভারতীয় পুরুষরা। গোপনে ভারতীয় পুরুষদের এক অভ্যাস ডেকে আনছে এই নতুন মহামারীকে। যা কিনা ইতিমধ্যেই দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে দেশের স্বাস্থ্যমহলকে। এই মহামারী যৌনতার সঙ্গে যুক্ত। তবে মূলত এর দ্বারা বিপাকে পড়ছেন পুরুষরাই। নাম ভায়াগ্রা (Viagra)মহামারী!
ব্যাপারটা খোলসা করে বলা যাক। ৩১ বছরের কমলনাথ (নাম পরিবর্তিত)। পেশায় আইটি কর্মী। বেশ কয়েক বছর ধরে পর্নোগ্রাফি দেখার নেশায় বুঁদ। আর এই আসক্তিই তাঁর বৈবাহিক সম্পর্ককে তিক্ত করেছে। কমলনাথ জানিয়েছেন, সঙ্গমের সময় পুরুষাঙ্গ ঠিক করে দৃঢ় হয় না, আর সেই কারণেই ভায়াগ্রা বা ভায়াগ্রার মতো যৌনউদ্দীপক ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। অন্যদিকে, ২৮ বছরেই যৌনতার প্রতি কোনও আকর্ষণ অনুভব করেন না রবিকুমার (নাম পরিবর্তিত)। তাঁর কথায়, যতদিন যাচ্ছে যৌনতার প্রতি আমার আকর্ষণ কমে যাচ্ছে। আমার প্রেমিকা রয়েছে। সে তো কোনও দোষ করেনি। প্রেমিকাকেও তো যৌনসুখ দেওয়াটা আমার কর্তব্য। উপায় না ভেবে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ডাক্তারই আমাকে যৌনতা বৃদ্ধি করার ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন।
[আরও পড়ুন: সর্বনাশ! এসব না জেনেই কি কন্ডোম ব্যবহার করছেন?]
শুধু কমলনাথ বা রবি নয়, এই ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে বহু ভারতীয় পুরুষদের মধ্যেই। আর যা কিনা ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের।
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (Indian Medical Association) প্রাক্তন প্রধান কে কে আগরওয়াল মুম্বইয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, এই ট্রেন্ড বহুদিন ধরেই দেখা গিয়েছে। তবে গত এক বছরে যেন এর প্রবণতা আরও বাড়ছে। রোগীরা নিজেই ভায়াগ্রার মতো ওষুধ চাইছেন। এমনকী, লোকলজ্জার ভয়ে প্রেসক্রিপশনে লিখতেও বারণ করছেন। আসলে সহজে এই ধরনের যৌন উদ্দীপক ওষুধ উপলব্ধ হওয়ায় এগুলোর প্রতি আসক্তি বাড়ছে! অনেকেই না বুঝে শুনে শুধুই বিজ্ঞাপন দেখে ওষুধ কিনছেন। এই অভ্য়াস ক্ষতিকারক।
তথ্য বলছে, এই ধরনের ওষুধ তৈরির পরিমাণ বাড়ছে। বাড়ছে বিজ্ঞাপনও। প্রকাশ্যে বহু কোম্পানি সঙ্গমকে দীর্ঘায়িত করার নানারকম ওষুধ বের করছেন, সাধারণ মানুষদের নজরে আসার জন্য নানারকম বিজ্ঞাপনের চমকও আনছে।
৩৪ বছরের কৌশিক বসু (নাম পরিবর্তিত) জানিয়েছেন, বিয়ের পর প্রথম প্রথম কোনও অসুবিধা হচ্ছিল না। তবে গত কয়েকবছর আগে থেকে সঙ্গমের সময় পুরুষাঙ্গ সেভাবে দৃঢ় হচ্ছে না। তাই ভায়াগ্রা খাওয়া শুরু করি। কিন্তু এখন দেখছি এটা একেবারেই নেশায় পরিণত হয়েছে!
মনোবিদরা বলছেন, কাজের চাপ, মানসিক ক্লান্তিই মূলত এর উৎস। যার প্রভাব পড়ছে আমাদের যৌনজীবনে। বেশিরভাগ মানুষ এই সমস্যাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। পরিবর্তে চটজলদি সমাধানের দিকে ঝুঁকছে, যা কিনা বিপদ ডেকে আনছে! ওষুধে আসক্ত হয়ে পুরুষরা হারাচ্ছেন স্বাভাবিক যৌনতার ক্ষমতা।