সুকুমার সরকার,ঢাকা: মেয়ের বিয়ের আসরেই খুন হলেন বাবা৷ ঢাকার মগবাজারে দিলু রোডের ঘটনা৷ যুবকের এলোপাথাড়ি ছুরির কোপে খুন হয়েছেন তোলা মিঞা নামে ৫৫ বছরের এক প্রৌঢ়৷ আহত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ফিরোজ বেগম৷ তদন্তে নেমেছে পুলিশ৷
[আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাংলাদেশকে সাহায্য কলকাতার চিকিৎসকদের, রবিবারই ঢাকা যাচ্ছেন তাঁরা]
স্থানীয় সূত্রে খবর, সজীব আহমেদ রকি নামে বছর উনিশের এক যুবকের সঙ্গে মেয়ে স্বপ্নার বিয়ে দিতে আপত্তি করেছিলেন তোলা মিঞা৷ তিনি মেয়ের অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন৷ বৃহস্পতিবার সেই বিয়ের আসরে ঢুকে সজীবই প্রাক্তন প্রেমিকার বাবার উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ৷ ঘটনার পর স্থানীয়রাই সজীবকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন৷ মেয়েটির মা ফিরোজা বেগম বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গিয়েছে, ইস্কাটন গার্ডেন স্কুলেই পড়াশোনা করতেন স্বপ্না এবং সজীব। তবে সজীব বয়সে স্বপ্নার চেয়ে একটু বড়৷ স্কুলে যাওয়াআসার সময় সজীব স্বপ্নাকে প্রেম নিবেদন ও উত্ত্যক্ত করত রকি। তার হাত থেকে রক্ষা পেতে অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পরপরই স্বপ্নাকে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরে পাঠিয়ে দেন তোলা মিঞা। এক বছর আগে টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় এনে এক পিসতুতো ভাইয়ের সঙ্গে স্বপ্নার বিয়ে দিয়ে দেন অভিভাবকরা। সে স্বামীর সঙ্গে থাকত মীরপুরে।
তবে সজীব কিন্তু থেমে থাকেনি৷ ক্রমাগতই সে স্বপ্নাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সে ফোন করে বিরক্ত করত। এমনকী সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বপ্নার সম্পর্কে অশালীন পোস্ট দিত। যার জেরে বিয়ের মাত্র তিন মাসের মাথায় স্বপ্নার সাজানো সংসার ভেঙে যায়। স্বপ্না চলে আসে মা-বাবার কাছে। সজীবের বিরুদ্ধে স্বপ্নার বাবা তোলা মিঞা হাতিরঝিল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ইভটিজিংয়ের মামলায় এক মাস জেল খেটে আড়াই মাস আগে জামিনে ছাড়া পায় সে। তার হাত থেকে মেয়েকে রক্ষা করতে চট্টগ্রামের এক পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন৷
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু, পরিষেবা দিতে নাজেহাল চিকিৎসকরা]
হাতিরঝিল সংলগ্ন প্রিয়াঙ্কা শুটিং হাউস। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাটকের শুটিং থাকলেও বৃহস্পতিবার কোনও বুকিং না থাকায় মেয়ে স্বপ্নার বিয়ের জন্য দুই ঘণ্টা সময় চেয়ে নিয়েছিলেন তোলা মিঞা। খাওয়ার সময়ে ডাইনিং টেবিলে বর পক্ষকে খাবার পরিবেশন করার সময়েই আচমকা সজীব শুটিং হাউসে ঢুকে পড়ে। সোজা চলে যায় রান্নাঘরে, যেখানে তোলা মিঞা খাবারের তদারকি করছিলেন। কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই সজীব উপর্যুপরি তোলা মিঞাকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। তাঁর স্ত্রী ফিরোজা বেগমকেও ছুরিকাঘাত করে সজীব। হাতিরঝিল থানার ওসি আবদুর রশিদ জানিয়েছেন, অভিযুক্ত সজীবকে আটক করা হয়েছে। ওসি বলেন, সজীব মেয়েটিকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। তবে মেয়ের পরিবারের মত ছিল না। মেয়েটির বিয়ে হচ্ছে খবর পেয়ে সজীব হামলা চালায়।