সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৬ নভেম্বর, প্রতিবছর এই দিনটি এলেই শিউরে ওঠে মু্ম্বই-সহ গোটা দেশ। ভুলতে চাইলেও বারবার ফিরে আসে ১১ বছর আগে ঘটা সেই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার স্মৃতি। মঙ্গলবার সকালে সেই দিনের স্মৃতিচারণা করে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা জানালেন দেশের প্রায় সমস্ত মানুষ। সকালবেলায় টুইট করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই তালিকায় ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিল্পপতি রতন টাটা-সহ অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। মঙ্গলবার সকালেই মুম্বইয়ের মেরিন ড্রাইভের পুলিশ মেমোরিয়ালে গিয়ে শহিদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি ও মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস।
[আরও পড়ুন: বড় জয় বিজেপি বিরোধীদের, সুপ্রিম নির্দেশে বুধবারই মহারাষ্ট্রে আস্থা ভোট]
মঙ্গলবার সকালে ভয়াবহ ওই জঙ্গি হামলার নিন্দা করে টুইট করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি লেখেন, ‘মু্ম্বইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার ১১ তম বর্ষে শহিদদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’ উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু টুইট করে শহিদ হওয়া নিরাপত্তা রক্ষীদের বীরত্ব ও দেশের প্রতি তাঁদের অবদানের কথা স্মরণ করান। শহিদদের আত্মবলিদানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বজনহারা পরিবারগুলির প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করার পাশাপাশি সংসদের অধিবেশনে দাঁড়িয়ে শহিদদের স্মৃতিচারণা করেন। বলেন, ‘মুম্বইয়ে ২৬/১১ সন্ত্রাসবাদী হামলার ফলে যাঁরা শহিদ হয়েছেন তাঁদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন জানাই।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেন, নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে ওইদিন যাঁরা আমাদের বাঁচিয়েছিলেন তাঁদের আত্মবলিদানকে শ্রদ্ধা জানাই। শহিদদের পরিবারের প্রতি আমাদের মনে গভীর সমবেদনা রয়েছে। ভারতের প্রতি ঘরে জন্ম নেওয়া বীর সন্তানদের জন্যই দেশের শান্তি নষ্ট করার ক্ষমতা কোনও জঙ্গির নেই। পাকিস্তানের জঙ্গিদের হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া তাজ হোটেলের ওই সময়ের একটি ছবি পোস্ট করে সেই ভয়াবহ দিনের স্মৃতিচারণা করেন শিল্পপতি রতন টাটা। শহিদদের আত্মবলিদানের কথা স্মরণ করে তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানান। লেখেন, ‘আমরা আঘাত পেতে পারি। কিন্তু, আমাদের নকআউট করা যায় না।’
[আরও পড়ুন: কোনও চাকরিই স্থায়ী নয়, শীতকালীন অধিবেশনে বিল আনছে কেন্দ্র]
২০০৮ সালের ২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত মুম্বইয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে গুলি লড়াই হয় ১২ জন জঙ্গির। ৯০ ঘণ্টায় মোট ন’বারের হামলায় মুম্বই এটিএসের যুগ্ম কমিশনার হেমন্ত কারকারে, অ্যাডিশনাল কমিশনার অশোক কামতে, ইন্সপেক্টর বিজয় সালাসকর, শশাঙ্ক শিন্ডে, এনএসজির মেজর সন্দীপ উন্নিকৃষ্ণণ, বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য ও ৬ মার্কিন নাগরিক-সহ মোট ১৬৬ জনের প্রাণ যায়। গুরুতর জখম হন আরও ৩০০-র বেশি মানুষ।
আজ সেই ঘটনার কথা স্মরণ করে টুইট করেন আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র মর্গান ওর্টাগাস। তিনি লেখেন, ‘১১ বছর আগে মুম্বইয়ে এক ভয়াবহ ঘটনায় ৬ মার্কিন নাগরিক-সহ ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আমরা সবসময় সেই মানুষগুলির পরিবারের পাশে আছি।’
The post মুম্বই জঙ্গি হামলার ১১ বছর, শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মোদি-মমতা-কোবিন্দের appeared first on Sangbad Pratidin.