shono
Advertisement
Calcutta High Court

স্বামীর মৃত্যুর ১২ দিনের মাথায় চাকরিহারা, কোলের মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা মালদহের আবীরা

স্বামী নেই, এরই মাঝে আদালতের নির্দেশে চাকরি খুঁইয়ে মেয়েকে নিয়ে পথে বসার অবস্থা 'শিক্ষিকা'র।
Posted: 05:40 PM Apr 27, 2024Updated: 05:40 PM Apr 27, 2024

সুমন করাতি, হুগলি: আকষ্মিক অসুস্থতায় মৃত্যু হয়েছে স্বামীর। সেই শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই মাত্র ১২ দিনের মাথায় হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন শ্রীরামপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষিকা আবীরা দাস। স্বামী নেই, উপার্জনের রাস্তাও বন্ধ আদালতের নির্দেশে সব মিলিয়ে জোড়া বিপর্যয়ে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা শিক্ষিকা।

Advertisement

২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় সফল হন মালদহের ইংলিশ বাজারের বাসিন্দা আবীরা দাস। ২০১৮ সালে শ্রীরামপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন তিনি। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সাহিত্য পড়াতেন তিনি। স্বামী অরূপ বিশ্বাসও মালদহের একটি বিদ্যালয়ে বাংলা পড়াতেন। কর্মসূত্রে শ্রীরামপুরে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন আবীরা। গরমের ছুটি পড়ার আগেই বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করে বিদ্যালয়ে খাতা জমা দেন। এর পর ৭ এপ্রিল খবর পান স্বামী অরূপ আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ওই দিনই মালদহ ছুটে যান শিক্ষিকা। পরদিন ৮ এপ্রিল স্বামীর মৃত্যু হয়। আবীরার শ্বশুর-শাশুড়ি নেই। স্বামীর মৃত্যুতে একমাত্র নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত তিনি। তার উপরে হাই কোর্টের নির্দেশ তাঁর কাছে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে।

এদিন কান্না ভেজা গলায় আবীরা বলেন, "আমাদের সমস্ত নথি জমা দিয়েছি। যতবার ডাকা হয়েছে ততবার গিয়েছি। তদন্তে সমস্ত রকম সহযোগিতা করেছি। অযোগ্যদের যে তালিকা বেরিয়েছিল তাতে আমার নাম ছিল না। তারপরও আদালতের নির্দেশে আমরা নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করার পরেও চাকরি হারালাম। আমার বৃদ্ধা মা ও নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাব? আমার স্বামীও মারা গিয়েছেন। আমাদের সামাজিক সম্মান নষ্ট হয়ে গেল। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ছিলাম। এখন ঋণ কী ভাবে শোধ করব? পরিবার নিয়ে কোথায় দাঁড়াব? আমরা কী সুবিচার পাব না? আমাদের কী অন্যায়? আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলার আগেই আমাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেওয়া হল।"

[আরও পড়ুন: একজনও মুসলিম প্রার্থী নেই! মহারাষ্ট্র কংগ্রেসে ‘সংখ্যালঘু বিদ্রোহ’, ‘মজা’ দেখছে বিজেপি]

এদিকে শুধু আবীরা নন, হাই কোর্টের নির্দেশে শ্রীরামপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের আরও তিন জনের চাকরি গিয়েছে। মোট চারজন শিক্ষিকার মধ্যে দুই জন বাংলার ও দুই জন ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষিকা। গরমের ছুটিতে একই বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের শিক্ষিকা বাতিল হওয়ায় বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পড়াশুনা কী ভাবে চলবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশে যে চার জন শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে তাঁদের কারও নামই অযোগ্যদের তালিকায় ছিল না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আইভি সরকার বলেন, আমরা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের সমস্ত নথিপত্র জমা দিয়ে ছিলাম পর্ষদে। প্রত্যেক শিক্ষিকাই দক্ষতার সঙ্গে বিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। চার জনের মধ্যে অযোগ্যদের তালিকায় কারও নামই ছিল না। সব মিলিয়ে এই ঘটনা বিদ্যালয় পরিচালনায় আমাদের কাছে অত্যন্ত সমস্যাজনক হয়ে উঠেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • হাইকোর্টের নির্দেশে শ্রীরামপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৪ জন চাকরিহারা।
  • 'আদালতের নির্দেশে আমরা নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করার পরেও চাকরি হারালাম', অভিযোগ আবীরার।
  • আবীরার দাবি, 'আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলার আগেই আমাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেওয়া হল।'
Advertisement