shono
Advertisement

Breaking News

দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা! মা বাঁচলেও মৃত্যু দুই খুদের

পারিবারিক অশান্তির মর্মান্তিক পরিণতি পুরুলিয়ায়।
Posted: 09:15 PM Feb 10, 2024Updated: 09:15 PM Feb 10, 2024

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দাম্পত্য কলহে মর্মান্তিক পরিণতি। স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক ঝামেলায় দুই সন্তানকে নিয়ে সেচ কুয়োয় মরণঝাঁপ মায়ের। শনিবার সকালে পুরুলিয়ার হুড়া থানার রখেড়া গ্রামের এই ঘটনায় মা কোনওভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেও দুই সন্তানকে বাঁচানো যায়নি। সেচ কুয়োতে পরপর ভেসে ওঠে ওই দুই সন্তানের মৃতদেহ। আর এই মর্মান্তিক ঘটনায় ওই দুই সন্তানের বাবা তথা স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্ত্রী তথা মৃত সন্তানদের মাকে এদিন রাতে গ্রেপ্তার করে হুড়া থানার পুলিশ। এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন এলাকার মানুষজন-সহ গ্রামে আসা পুলিশ কর্মীরা।

Advertisement

হুড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, দুই সন্তানের নাম অভিজিৎ কুন্ডু (৮) ও রনজিৎ কুন্ডু (৫)। অভিজিৎ স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ওই স্কুলেই রঞ্জিত পড়ে প্রথম শ্রেণিতে। এদিন একেবারে সাতসকালে ওই দুই সন্তানের বাবা, ধান ব্যবসায়ী কৃপানাথ কুন্ডু তাঁর আত্মীয়দের চিকিৎসায় দক্ষিণ ভারত যাবেন বলে বাড়ি থেকে বাসে করে রওনা হন। এদিন বিকালের দিকে খড়গপুর স্টেশন থেকে তাঁদের ট্রেন ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মীয়ের চিকিৎসায় টাকা দেওয়া-সহ নানান কারণে স্বামী-স্ত্রী-র দাম্পত্য কলহ কয়েকদিন আগে মাত্রছাড়া জায়গায় পৌঁছয়। সম্ভবত সেই কলহ ও পারিবারিক ঝামেলা থেকেই চৈতালিদেবী তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ির অদূরে সেচ কুয়োয় মরণ ঝাঁপ দেন।

[আরও পড়ুন: চাকুরিজীবীদের জন্য বড় ঘোষণা, ইপিএফে বাড়ল সুদের হার]

আপাতত পুলিশের কাছে যা খবর এসেছে, প্রথমে মা চৈতালিদেবী তাঁর ছোট ছেলেকে ওই কুয়োতে ফেলেন। তার পর ঠেলে দেন বড় ছেলেকে। এর পর তিনি নিজে ঝাঁপ দেন। কুয়োর জলে পড়েই চিৎকার শুরু করতে থাকেন তিনি। এই ঝাঁপ দেওয়ার দৃশ্য এক সবজিওয়ালা দেখতে পেয়ে এলাকার বাসিন্দাদেরকে বলেন। তারপরই ওই এলাকার বাসিন্দা তাপস পতি দ্রুত সেচ কুয়োতে এসে দড়ি গাছে বেঁধে কুয়োর জলে পড়ে থাকা চৈতালি দেবীকে উদ্ধার করেন। তাঁর কাছ থেকে জানতে চান, তাঁর দুই সন্তান কোথায়? চৈতালি দেবী নানান অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। কখনও বলেন, দুই ছেলে গাছের নিচে রয়েছে। পরক্ষণই আবার বলতে থাকেন, তারা বাড়িতে আছে।

এরপর কুয়ো থেকে একটি জুতো ভেসে ওঠে। তখনই সন্দেহ হয় গ্রামের বাসিন্দা তাপসের। ততক্ষণে এলাকায় ভিড় জমে যায়। এর পরেই ভেসে উঠতে থাকে দুই সন্তানের নিথর দেহ। পরে পাম্পের সাহায্যে জল কমিয়ে ওই দুই সন্তানকে উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে চৈতালি দেবীকে বারবার জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি এই কাজ করলেন? তিনি কোনও কথা বলতে চাননি। এরপরই তার স্বামীর কানে বিষয়টি চলে যায়। ওই খবর শোনা মাত্রই আত্মীয়ের চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারত না গিয়ে মাঝপথেই বাড়িতে ফিরে আসেন। এদিন সন্ধ্যায় স্বামীর অভিযোগে তার স্ত্রী তথা মৃত দুই সন্তানের মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিবার তাঁকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হবে। ওই তাপস পতি জানান, ” চৈতালিদেবীকে কুয়ো থেকে উদ্ধার করার পর তার কথাবার্তা ঠিকঠাক লাগছিল না। ছেলেরা কোথায় আছে এই বিষয়টি গোপন করছিলেন।” এই ঘটনায় চৈতালিদেবীকে দুষছেন এলাকার মানুষজন।

[আরও পড়ুন: কিশোরী মেয়েকে দু’বার বিক্রি মায়ের! ‘খদ্দেরে’র অত‌্যাচারে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুতে রহস‌্য]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement