সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভালবাসা যে সীমান্তের বাধা মানে না, সেকথা সকলেরই জানা। পাশাপাশি প্রিয় মানুষের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য যে ধৈর্যের পরীক্ষাও দিতে হয়, তাও নতুন কথা নয়। সেই কথাগুলিই যেন নতুন করে প্রমাণিত হল ফের। সোমবার ছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। আর সেদিনই পাকিস্তান (Pakistan) থেকে ভারতে এলেন দুই বধূ। ভারতেই রয়েছেন তাঁদের স্বামী। কেবল ভিসার রক্তচক্ষু মিলিত হতে দিচ্ছিল না তাঁদের। অবশেষে অপেক্ষার অবসান।
ছগন কানোয়ার ও কৈলাস বাই। এই দুই পাক নারীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রাজস্থানের (Rajasthan) বারমেরের দুই বাসিন্দা মহেন্দ্র সিং ও নেপাল সিংয়ের। এতদিনের অপেক্ষার পর দুই নারী পা রাখলেন শ্বশুরবাড়ির মুলুকে। পেরলেন ওয়াঘা সীমান্ত। নিরাপত্তা পরীক্ষা ও কোভিড পরীক্ষার বাধা পেরিয়ে তাঁদের শ্বশুরবাড়িতে যাওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। সোমবার স্ত্রীদের অপেক্ষায় সীমান্তরেখাতেই অপেক্ষা করছিলেন তাঁদের স্বামীরা। এতদিন পরে মনের মানুষদের দেখা পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উত্তেজিত তাঁরা।
[আরও পড়ুন : আর দু’ভাগে নয়, মঙ্গলবার থেকে আগের মতো একসঙ্গে শুরু রাজ্যসভা-লোকসভার অধিবেশন]
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায় নেপাল সিংকে। তাঁর কথায়, ”আমি কৃতজ্ঞ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কৈলাস চৌধুরীর কাছে। উনি আমাদের লাগাতার সাহায্য করেছেন। ভিসা পেতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।” প্রথমে দুই পাকিস্তানি তরুণীকে বিমানপথে ভারতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হলেও পরে তাঁদের আর্থিক অক্ষমতার দিকটি বিবেচনা করে সড়কপথেই এদেশে আসার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে এই মিলনের মধ্যেও খানিক বিষাদের সুর। নেপালের ভাই বিক্রমের স্ত্রী নির্মলা ভিসা পাননি। তাই তাঁর আর আসা হয়নি ভারতে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসেই বিয়ে হয়েছিল দুই ভাইয়ের।
এই তিনজনের মধ্যে মহেন্দ্রর কাহিনি সবচেয়ে বেশি ‘সিনেম্যাটিক’। প্রাথমিক ভাবে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে তাঁর বিয়ে ঠিক হলেও বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার আক্রমণের পরে বিয়ের তারিখ পিছিয়ে দিতে হয়। পরে ২৫ এপ্রিল তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্তু ছগন ভিসা না পাওয়ায় একলাই দেশে ফিরে আসতে হয় মহেন্দ্রকে।
তারপর থেকে শুরু হয় অনন্ত প্রতীক্ষা। বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও কিছুতেই ভিসা পাচ্ছিলেন না ছগন। শেষ পর্যন্ত তা মেলার পরেই মুছে যায় সীমান্তের ব্যবধান। মাসের পর মাস জুড়ে চলতে থাকা বিরহকে সরিয়ে রেখে আবার দেখা দু’জনের। যেন লেখা হল নয়া রূপকথা।