ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: রাজ্যের প্রায় এক কোটি মানুষ উচ্চরক্তচাপে ভোগেন। এই তথ্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের। শুধু তাই নয়, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের আরও পর্যবেক্ষণ ১) রাজ্যের ২৫ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক নাগরিক কার্ডিওভাসকুলার সমস্যায় ভোগেন। ২) শুধুমাত্র লবণ ও পটাশিয়ামের হেরফেরে রাজ্যের ৩০ শতাংশ জনসংখ্যা ফি বছর কমছে। ৩) রাজ্যের নাগরিকদের ২৫ শতাংশ উচ্চরক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন।
এটা যেমন একটা দিক, তেমনই রাজ্যের ২৫ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক নাগরিক হাইপারটেনশনের রোগী। করোনা আবহে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্প থেকে এমন তথ্য পেয়ে নড়চড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসন। আর এই তথ্যকে হাতিয়ার করে সাতটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন, ১২৮টি পুরসভা এবং কয়েক হাজার পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়িবাড়ি সমীক্ষা শুরু করেছে। প্রথম দফায় বীরভূম, হাওড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, এবং বর্ধমান জেলার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: মদের মতোই মিষ্টি ক্ষতিকর! কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক?]
‘ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অফ ক্যানসার, ডায়াবেটিস অ্যান্ড স্ট্রোক’ (এনপিপিসিসিডিএস) অনুযায়ী এই ধরনের অসংক্রমিত রোগের দ্রুত নিরাময়ের জন্য রাজ্যজুড়ে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যাঁরা এই ধরনের রোগে ভুগছেন, সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতে দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা পান তার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এটা তো গেল রাজ্যের প্রাথমিক চিত্র। সর্বভারতীয় তথ্য আরও ঘোরালো। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের প্রাথমিক তথ্য বলছে, দেশের ২০ কোটি নাগরিক উচ্চরক্তচাপে ভোগেন। আবার এঁদের মধ্যে মাত্র দু’ কোটি বা ১০ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা পরিষেবার মধ্যে আছেন। আর ১০ কোটি রোগী শারীরিক সমস্যার কথা জানলেও তেমনভাবে চিকিৎসা পরিষেবার মধ্যে নেই। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, নির্দিষ্ট সময়ে চিকিৎসা না হওয়া অথবা দেরিতে হাসপাতালে পৌঁছনোর জন্য অধিকাংশ রোগীর মৃত্যু হয়। বস্তুত, এই ধরনের অসংক্রমিত রোগের চিকিৎসার জন্য দরকার সচেতনতা। আর সেটারই অভাব প্রকট।
[আরও পড়ুনছ OMG! নিজেই নিজেকে বিয়ে করলেন এই মহিলা, প্রথা মেনে চুম্বনও করলেন, কীভাবে জানেন?]়
জনসংখ্যাভিত্তিক তথ্যসংগ্রহ ও সেই তথ্য বিশ্লেষণের জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর দু’দফায় সমীক্ষা ও প্রাথমিক এবং জেলা হাসপাতালগুলিকে কাজে লাগিয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষজ্ঞদের অভিমত, যে কোনও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাইপারটেনশনের রোগীদের চিকিৎসা সম্ভব। কিন্তু সচেতনতার অভাবে সেই কাজ করা হয় না।
উচ্চ রক্তচাপ এবং হাইপারটেনশনের রোগীদের জরুরিভিত্তিতে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্যের সব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রতিটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাইপারটেনশনের রোগের ওষুধ অন্তত ছ’মাসের জন্য মজুত করা হবে। মজুত রাখতে হবে অ্যামলোপিডিন জাতীয় উচ্চরক্তচাপের ওষুধও। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে অন্তত ২-৩টি ব্লাডপ্রেশার মাপার যন্ত্র অবশ্যই রাখতে হবে। এবং প্রোটোকল মেনে চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।