স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি : দিনছয়েক আগে ফায়ারিং অনুশীলনের সময় মর্টারের আঘাতেই যে উত্তরের জঙ্গলে তিনটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল, তা অবশেষে স্বীকার করে নিলেন সেনাকর্তারা। ১৪ মার্চ সরস্বতীপুর জঙ্গল থেকে হাতির দেহ এবং মর্টারের টুকরো উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে সোমবার সুকনা বনবাংলোতে সেনাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বন দফতরের পদস্থ কর্তারা। সেখানেই আর্টিলারির ব্রিগেডিয়ার এবং দু’জন কর্নেল পদমর্যাদার সেনাকর্তা তিনটি হাতির মৃত্যুর জন্য ক্ষমা চেয়ে দায় স্বীকার করেন। বন দফতরের তরফে সেনা কর্তাদের ফায়ারিং অনুশীলনের জায়গা বনাঞ্চলের আশপাশে না রাখতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়। ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ড্রোন মাউন্ট করা ক্যামেরা ব্যবহার করা এবং ফায়ারিং অনুশীলনের আগে ও চলাকালীন এলাকা স্ক্যান করার জন্য হাই মাস্ট ক্যামেরা ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেনাকর্তারা রাজি হয়েছেন। এদিনের বৈঠকে বন দফতরের তরফে ছিলেন প্রধান মুখ্য বনপাল (উত্তরবঙ্গ) উজ্জ্বল ঘোষ, উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রাজেন্দ্র জাখর এবং মুখ্য বনপাল (উত্তর সার্কেল) এস কে মোলে।
[আরও পড়ুন: মণীশ কোঠারির কোটি টাকার জমির যৌথ মালিক পুরপ্রধান ও TMC নেতা! বোলপুরে চাঞ্চল্য]
উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বলেন, ‘‘তিস্তা নদীর ওদলাবাড়ি, দুধিয়া, রোহিণী এলাকায় সেনাবাহিনীর ফায়ারিং অনুশীলন হয়ে থাকে। পাশেই জঙ্গল। ১৪ মার্চ হাতির দেহ এবং মর্টারের টুকরো উদ্ধারের পরই সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ জানানো হয়। এরপর ওরা আলোচনায় বসতে রাজি হয়। এদিন সেই বিষয়ে আলোচনা হয়।’’ বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলোচনার শুরুতেই বন দফতরের তরফে ঘটনার প্রমাণ হিসাবে উদ্ধার করা মর্টারের টুকরো, ফায়ারিং রেঞ্জ থেকে হাতির দূরত্ব ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়। সেনাকর্তারা তিনটি হাতির মৃত্যুর জন্য ক্ষমা চেয়ে দায় স্বীকার করেন। এরপরই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পুনরাবৃত্তি স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থার প্রসঙ্গ ওঠে। বন দফতরের কর্তারা ড্রোন মাউন্ট করা ক্যামেরা ব্যবহার করার এবং ফায়ারিং অনুশীলনের আগে ও চলাকালীন এলাকা স্ক্যান করার জন্য হাই মাস্ট ক্যামেরা ব্যবহারের পরামর্শ দেন। সেনাকর্তারা রাজি হন। স্ক্যানিং প্রক্রিয়ায় বনকর্মীরাও থাকবেন। বন্যপ্রাণ যেন ফায়ারিং সাইটে ঢুকে না পড়ে সেজন্য বন দফতরের তরফে এলাকার চারপাশ ইলেকট্রনিক বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা হিসাবে ফায়ারিং রেঞ্জকে বনাঞ্চলের বাইরে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেনাকর্তারা ওই বিষয়ে তাঁদের সদর দফতরের সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাস দেন।