স্টাফ রিপোর্টার: পাওনা টাকা দেওয়ার নাম করে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ঘরের ভিতর ডেকে নিয়ে গিয়ে মধুচক্রের ফাঁদে ফেলে এক যুবতী। যুবতীর দুই বন্ধু জোর করে এমন কিছু ছবি তোলে, যাতে মনে হয় যেন যুবতীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ব্যবসায়ীর। এর পর লুট করা হয় ওই ব্যবসায়ীর গয়না ও মোবাইল। অশ্লীল ছবিগুলি দেখিয়ে শুরু হয় ‘ব্ল্যাকমেল’। ওই ব্যবসায়ীকে ধর্ষণের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগ পেয়ে পাল্টা ফাঁদ পাতেন মধ্য কলকাতার বউবাজার থানার আধিকারিকরা। ডিসি (সেন্ট্রাল) মিতেশ জৈন জানান, পুলিশের জালে ধরা পড়েছে ‘হানি ট্র্যাপ’-এর মাথা বৈশাখী গায়েন নামে ওই যুবতী ও তার দুই সঙ্গী মহম্মদ ইমরান ও শেখ ইমরানুল্লা। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লুট হওয়া জিনিসপত্রগুলি।
[অবশেষে গ্রেপ্তার পুরুলিয়া সুচকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সনাতন]
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত কিছুদিন আগেই। বউবাজার এলাকায় ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দোকান। সেখানে সোনার গয়না বন্ধক দিতে আসে মুচিপাড়া এলাকার প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রিটের বাসিন্দা বৈশাখী। নিজের কিছু গয়না বন্ধক দিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেয়। এর কয়েকদিন পর বৈশাখী ব্যবসায়ীকে ফোন করে বন্ধক দেওয়া গয়না ফেরত নিতে চায়। টাকা ফেরত দেবে বলেও জানায়। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ও সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলের কাছে একটি বাড়িতে ব্যবসায়ীকে বৈশাখী ডেকে পাঠায়। ব্যবসায়ী বাড়িটিতে গেলে তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে যায় বৈশাখী। ঘরের ভিতর ঢুকে পড়ে তার দুই সঙ্গীও।
ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ওই দুই ব্যক্তি তাঁর উপর বলপ্রয়োগ করে। যুবতী তার সঙ্গে ব্যবসায়ীকে ঘনিষ্ঠ হতে বাধ্য করে। সেই ছবি মোবাইলে তুলে রাখে ইমরান ও ইমরানুল্লা। এই ঘটনার পর ব্যবসায়ীর চারটি সোনার আংটি, এটিএম কার্ড ও দু’টি মোবাইল কেড়ে করে তারা। এখানেই শেষ হয়নি। এর পর থেকে ব্যবসায়ীকে ফোন করে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে ওই যুবতী ও তার বন্ধুরা। বলে, যথেষ্ট টাকা ও গয়না না পেলে তাঁর ওই ছবি দেখিয়ে ধর্ষণের মামলায় ফাঁসানো হবে। ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
বেশ কিছুদিন ধরে চলে এই হুমকি। শেষ পর্যন্ত বউবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ী। পুলিশ তদন্ত শুরু করে মোবাইলের সূত্র ধরে। ‘হানি ট্র্যাপ’-এর মক্ষীরানিকে ধরতে পুলিশ পাল্টা ফাঁদ পাতে। পুলিশের জালে ধরা পড়ে বৈশাখী ও তার দুই সঙ্গী। প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রিটে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় লুট হওয়া সোনার আংটি, মোবাইল ও এটিএম কার্ড। ধৃতদের মোবাইল থেকে উদ্ধার হয় ওই অশ্লীল ছবিগুলিও। এর আগে তারা এই পদ্ধতিতে কোনও লুটপাট চালিয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত কিনা তাও দেখা হচ্ছে।
[১২ ঘণ্টা দামোদরে ভেসেও বাঁচলেন বৃদ্ধা]
The post মধুচক্রের ফাঁদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী, ঘনিষ্ঠ ছবি তুলে ব্ল্যাকমেলের চেষ্টা appeared first on Sangbad Pratidin.