সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামাস জঙ্গিদের সমূলে বিনাশ করতে হবে। এটাই এখন একমাত্র লক্ষ্য ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। আর সেই কারণে গোটা গাজা ভুখণ্ডজুড়ে হামাস জঙ্গিদের ডেরা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। এই মুহূর্তে তেল আভিভের 'হিটলিস্টে' রয়েছে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ। এবার নাকি তার তিন ছেলেকে বোম মেরে উড়িয়ে দিয়েছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস।
প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের নাম মুছে ফেলতে গাজায় তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েল। খুঁজে খুঁজে হামলা চালানো হচ্ছে জঙ্গি ঘাঁটিগুলোতে। বুধবার হামাস প্রধানের ছেলের মৃত্যুর নিশ্চিত করে আইডিএফ দাবি করেছে, "হামাসের তিন ছেলে আমির, হাজিম ও মহম্মদকে খতম করে দেওয়া হয়েছে। যখন তারা গাজায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাতে যাচ্ছিল তখন তাদের উপর আঘাত হানা হয়।" এনিয়ে আল জাজিরাকে একটি সাক্ষাৎকার দেয় হানিয়েহ। সেও তার সন্তানদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলে, "তারা জেরুজালেম ও আল-আকসা মসজিদকে মুক্ত করতে শহিদ হয়েছেন।" নাম না ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে হানিয়েহ বলে, "প্রতিশোধ ও খুনের উদ্দেশেই অপরাধী শত্রুরা কাজ করে। তারা কোনও আইন মানে না। নেতাদের পরিবারকে আক্রমণ করাতেই তারা বিশ্বাসী।"
[আরও পড়ুন: কয়েদি ইমরানের জন্য খরচ হচ্ছে লাখ লাখ টাকা, কেন?]
এদিকে ইজরায়েলের দাবি, আমির হানিয়েহ হামাসের সামরিক বাহিনীর স্কোয়াড কমান্ডর হিসাবে কাজ করত। আর হাজিম ও মহম্মদ অপারেটিভস হিসাবে নিযুক্ত ছিল। বলে রাখা ভালো, চলতি মাসেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার সন্দেহে হানিয়েহের এক বোনকে গ্রেপ্তার করেছিল ইজরায়েলি পুলিশ। ইজরায়েলের তেল শেভার বেদুইন গ্রাম থেকে তাকে পাকরাও করা হয়েছিল। একাধিক প্যালেস্তিনীয় সংবাদমাধ্যম দাবি ছিল, ধৃত মহিলার নাম জেবা আবদাল সালেম হানিয়েহ।
এই গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছিল, বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। হামাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, ইজরায়েলের বুকে জঙ্গিদের হামলায় সাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ধৃতের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় বিভিন্ন নথি, একাধিক টেলিফোন ও আরও অন্যান্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সেখান থেকেই ইজরায়েলের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তিনি জাতীয় নিরাপত্তাও লঙ্ঘন করেছেন।
উল্লেখ্য, হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহকে বহু দেশ হামাসের প্রধান হিসাবে গণ্য করে। নয়ের দশকের শেষ থেকে উত্থান শুরু হয় হানিয়েহর। হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের ‘ডান হাত’ বলে পরিচিত কুখ্যাত এই জঙ্গি। ২০০৬ সালে প্যালেস্টাইনের প্রধানমন্ত্রীও নির্বাচিত হয়। গত বছর নভেম্বরে গাজায় তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েলি ফৌজ। আইডিএফের অভিযোগ ছিল, ওই বাড়িতে বসেই ৭ অক্টোবরের হামলার ছক কষা হয়েছিল। গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে একের পর হামাসের শীর্ষ নেতাকে খতম করেছে ইজরায়েলি ফৌজ।