অর্ণব আইচ: বড়দিন (Christmas) ও বর্ষবরণে পার্ক স্ট্রিট (Park Street) ও সংলগ্ন এলাকায় গাড়ি পার্কিংয় নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। ইচ্ছামতো গাড়ি পার্ক করার কারণে যাতে পার্ক স্ট্রিট বা আশপাশের রাস্তায় যানজট না হয়, সেদিকে থাকছে পুলিশের নজর। ২৫ ও ৩১ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণি এলাকায় হতে পারে বিপুল ভিড়। ভিড় এড়াতে বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটের নিরাপত্তায় থাকছে অন্তত দেড় হাজার পুলিশ। বর্ষবরণের রাতে পুলিশের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে তিন হাজার।
পুলিশ জানিয়েছে, বড়দিন ও বর্ষবরণে কয়েক লাখ মানুষ জড়ো হতে পারে পার্ক স্ট্রিট অঞ্চলে। গাড়ি বা বাইক আরোহীরা কোনওমতেই পার্ক স্ট্রিটে গাড়ি পার্কিং করতে পারবেন না। পার্ক স্ট্রিটে যানজট এড়াতেই গাড়ি বা বাইক ক্যামাক স্ট্রিট এবং রাসেল স্ট্রিটে পার্কিং করতে হবে। ওই দুই রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা যদি বেড়ে যায়, তখন সংলগ্ন অন্য রাস্তায় রাখতে হবে গাড়ি। সেখান থেকে হেঁটেই সবাইকে যেতে হবে পার্ক স্ট্রিট বা পছন্দমতো জায়গায়।
[আরও পড়ুন: মিলল স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অনুমোদন, বুস্টার ডোজ হিসেবে আসছে ন্যাজাল ভ্যাকসিন]
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, পুরো পার্ক স্ট্রিট ও তার আশপাশের অঞ্চলকে ভাগ করা হচ্ছে প্রায় দশটি সেক্টরে। প্রত্যেকটি সেক্টরের দায়িত্বে থাকছেন একজন করে ডিসি। এ ছাড়াও তাঁদের সঙ্গে জায়গার গুরুত্ব বুঝে থাকছেন এক বা দু’জন করে অ্যাসিসস্ট্যান্ট কমিশনার, একাধিক ইন্সপেক্টর ও অন্যান্য আধিকারিক ও পুলিশকর্মীরা। পার্ক স্ট্রিটে ভিড় সামলাতেই তৈরি হচ্ছে আলাদা কন্ট্রোল রুম। প্রচণ্ড ভিড়ে পার্ক স্ট্রিটকে মানুষ চলাচলের জন্য ‘ওয়ান ওয়ে’ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ফলে জওহরলাল নেহরু রোড দিয়ে পার্ক স্ট্রিটে প্রবেশ করে বের হতে হবে রাসেল স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি দিয়ে। জওহরলাল নেহরু রোডে যাতে যানজট না হয়, সেদিকেও নজর রাখবে অতিরিক্ত সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ। নিরাপত্তা ও নজরদারির জন্য তৈরি হচ্ছে পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার। এ ছাড়াও বিভিন্ন বাড়ির ছাদ থেকে বাইনোকুলারে রাখা হবে নজরদারি। যাঁরা দূর থেকে আসবেন, তাঁদের যে কোনও রকমের সাহায্যের জন্য থাকছে ন’টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ।
[আরও পড়ুন: চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নতুন উপজাতি, ফের লকডাউনের পথে হাঁটবে কেন্দ্র? কী জানাল IMA?]
পার্ক স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণি অঞ্চলের রেস্তরাঁ ও পানশালার উপর রাখা হচ্ছে বিশেষ নজর। পানশালা ও রেস্তরাঁর ম্যানেজারদের সঙ্গে পুলিশ বৈঠক করবে। তাঁদের বাইরে ও ভিতরে অতিরিক্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর অনুরোধ জানানো হবে। পানশালা থেকে বেরিয়ে যাতে কেউ গোলমাল না করে, তার জন্য অতিরিক্ত সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষীও নিয়োগ করতে বলা হবে। শ্লীলতাহানি ও ইভ টিজিংয়ের মতো ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত সংখ্যক সাদা পোশাকের পুলিশ ও মহিলা পুলিশ মোতায়েন করা হবে। রাতে যাতে বিনা হেলমেটে বেপরোয়া গতিতে বাইক বা স্কুটি না চালায়, সেদিকে নজর রাখা হবে। মদ্যপ গাড়ি ও বাইক চালক ধরতে বিভিন্ন রাস্তায় নাকা চেকিং করে চলবে পরীক্ষা। প্রয়োজনে ড্রোনের মাধ্যমেও চলবে নজরদারি। পুরো দক্ষিণ, মধ্য কলকাতা ও বাইপাস লাগোয়া অঞ্জলজুড়ে কুইক রেসপন্স টিম, পিসিআর ভ্যান, হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড ও বাইক টহল দেবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভিড় সামাল দিতে রাতে ফ্লাইং সার্ভিস চালাবে পরিবহণ দপ্তরও। পার্ক স্ট্রিট থেকে ছেড়ে সরকারি বাস হাওড়া-শিয়ালদহ-সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাবে। মূলত রাত ৮টা থেকে বিশেষ এই পরিষেবা শুরু হবে। আর মাঝরাত পর্যন্ত বাস পাওয়া যাবে। ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর রাতে চলবে। এসি, নন-এসি দুই বাসই পাবেন যাত্রীরা। ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর রাতে বাড়তি বাস চালাবেন বলে জানিয়েছেন বেসরকারি বাস মালিকরাও।