shono
Advertisement

অনুপ্রেরণা সেই মানসী, প্রথম মহিলা ক্যাব চালকের পথেই আরও ৩৫

নারী দিবসের সাধারণ মেয়েদের অনুপ্রেরণা তাঁরাই!
Posted: 12:29 PM Mar 08, 2021Updated: 03:11 PM Mar 08, 2021

স্টাফ রিপোর্টার: প্রথমে ছিলেন একা। অনেকেই দেখে নাক শিঁটকোতেন। মেয়ে কিনা ড্রাইভার! কিন্তু সেকথা কানে তোলেননি। দুই ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে হাতে ধরেছেন স্টিয়ারিং। বসেছেন চালকের সিটে। নারীদের সুরক্ষায় শহরের রাস্তায় ছোটাচ্ছেন পিংক ক্যাব। কখনও রাত দেড়টা তো কখনও তিনটে। গাড়ি ঘুরিয়ে নিজের জীবনের চাকা ঘোরানোর মালিকের নাম মানসী মৃধা দত্ত। আর তাঁকে দেখেই কলকাতা শহরে জীবনের চাকা ঘোরাচ্ছেন রেবা, শঙ্করী, মিঠু, অর্চনা, শ্যামলীরা। আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তাঁরাই হয়ে উঠেছেন নারীদের অনুপ্রেরণা।

Advertisement

প্রায় ছ’বছর ধরে মানসীদেবী পারেন গাড়ি চালাতে। কিন্তু নিজের গাড়ির বয়স বছর দুয়েক। রাজ্য সরকারের গতিধারা প্রকল্পের আওতায় প্রথম রাস্তায় নামিয়েছিলেন পিংক ক্যাব। তার দেখাদেখি আরও সাতজন। সেই থেকেই ছোটা শুরু করেছে তাঁদের জীবনের চাকা। সময়ের কোনও খেয়াল থাকে না তাঁদের গাড়ির চাকা ঘোরাতে গিয়ে। সন্তোষপুরে বাড়ি মানসীদেবীর। স্বামী নেই। দুই ছেলেকে নিয়েই সংসার। পিংক ক্যাব কেনার পর তা অ্যাপ ক্যাব সংস্থায় চুক্তিবদ্ধ করে নেন। তারপর সেখান থেকে যখন যেমন ফোন আসে তেমনই গন্তব্যে গাড়ি ছোটান। “লকডাউনের পর এখন গড়ে আট-দশটা ট্রিপ হয়। আগে কখনও চোদ্দো-পনেরোটাও হত। এখন আগের থেকে কিছুটা আয় কমেছে। তবে বিয়ের দিনগুলোয় অনেকরাত পর্যন্ত ট্রিপ মেলে। আগে শুধু মহিলা যাত্রী উঠতেন। এখন সকলেই উঠতে পারেন। মহিলা যাত্রী হলে শুধু প্রত্যাখ্যান করা যায় না। এই নিয়ম পিংক ক্যাবে।”, জানাচ্ছিলেন তিনি।

[আরও পড়ুন : করোনার পর ভোট কাঁটা! চৈত্র সেলে মন্দার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের]

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের নিরাপত্তার কথা এবং কিছু মহিলার কর্মসংস্থানের কথা ভেবে এই পিংক ক্যাব পরিষেবার সূচনা করেছিলেন। শুরুতে আটজন গাড়ি নামালেও এখন সেই সংখ্যাটা অনেকটাই বেড়েছে। প্রায় ৩৫ জন মহিলা ক্যাব চালান। তবে সবাই যে পিংক ক্যাবই চালান তেমনটা নয়। চালান অন্য অ্যাপ ক্যাবও। কিন্তু পথটা দেখিয়েছিলেন মানসী। জানান, আগে অনেকেই মহিলা ড্রাইভার দেখে গাড়িতে উঠতে ভয় পেতেন। কিন্তু এখন আর পান না। বরং পুলিশ অনেক সাহায্য করে রাস্তায়। দুপুর থেকে মাঝরাত পর্যন্ত গাড়ি ছোটান তিনি। বলেন, “শুরুটা এত সহজ ছিল না। কিন্তু দমে যাইনি। তাই সফল হয়েছি। আমার দেখাদেখি প্রচুর মেয়ে আজ গাড়ি চালাচ্ছে। আরও প্রায় ১০০ মহিলা গাড়ি চালাতে চাইছেন। লাইসেন্স হয়নি বলে যাত্রী নিয়ে চালাতে পারছেন না।”

একইরকমভাবে গাড়ি চালিয়ে সংসারের ভার কাঁধে নিয়েছেন রেবা, শঙ্করী, মিঠু, অর্চনা, শ্যামলিরা। শঙ্করী হালদারের বাড়ি সোনারপুর, রেবা কয়ালের টালিগঞ্জ, মিঠুদের বাড়ি নারায়ণপুর, শ্যামলী হাজরার বাড়ি অভিষিক্তায়। এঁরা প্রত্যেকেই দিনরাত ছুটে বেড়ান শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। কোনও প্রতিকূলতাই তাঁদের দমাতে পারেনি। তাই নারী দিবসের দিনে আসল নারী তাঁরাই।

[আরও পড়ুন : অবশেষে প্রতীক পাচ্ছে আব্বাস সিদ্দিকির ISF, দুশ্চিন্তার অবসান সংযুক্ত মোর্চার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement