shono
Advertisement

লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেন্ড চার সিবিআই আধিকারিক, শুরু বিভাগীয় তদন্ত

সিবিআই আধিকারিকদের সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনায় তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
Posted: 11:54 AM Jan 16, 2023Updated: 05:04 PM Jan 16, 2023

অর্ণব আইচ: বগটুই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেন্ড চার সিবিআই আধিকারিক। তাঁদের মধ্যে ২জন তদন্তকারী আধিকারিক এবং বাকি দু’জন কনস্টেবল। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। 

Advertisement

সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, সাসপেন্ড করা হয়েছে বগটুই কাণ্ডের তদন্তকারী আধিকারিক বিলাস মাধঘুট রাহুল প্রিয়দর্শী, ভাদু শেখ হত্যা কাণ্ডের তদন্তকারী আধিকারিক রাহুল প্রিয়দর্শী, কনস্টেবল ভাস্কর মণ্ডল-সহ আরও একজনকে। লালন শেখের মৃত্যুর সময় সিবিআই ক্যাম্পেই ছিলেন ওই চার আধিকারিক। প্রাথমিক তদন্তে কর্তব্যে গাফিলতির প্রমাণ মেলায় এই চারজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলেই সিবিআই সূত্রে খবর। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছে বলেই সিবিআই সূত্রে খবর।

[আরও পড়ুন: অস্ত্র-সহ গ্রেপ্তার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের ছেলে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভাঙড়ে চাঞ্চল্য]

সিবিআই আধিকারিকদের সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার দাবি, কীভাবে অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়, সিবিআই আধিকারিকদের সাসপেন্ড হওয়া দেখে শিখতে হবে রাজ্য সরকারকে। তার পালটা জবাব দেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “আমার ধারণা এটা রুটিন পদ্ধতিতে হয়েছে। সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে যে প্রশ্নগুলি উঠেছে তার জবাব এখনও মেলেনি।”

উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ ভাদু শেখকে তার বাড়ির সামনে খুন হতে হয়। খুনের সময়ও ভাদু লালনের কাছে ছিল। ভাদু খুনের পালটা বগটুই গ্রামে গণহত্যা চলে। এমনকি পরেরদিন সকালেও গ্রামে যেতে সাংবাদিকদের বাধা দেয় লালন। ন’মাস পরে ৩ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেপ্তার হন লালন। তার ৯দিনের মাথায় সিবিআই হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় লালনের। নিহতের স্ত্রীর দাবি, খুন করা হয়েছে লালনকে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে সিআইডি।

৩৯ বছর বয়সি লালন, গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। রামপুরহাট উচ্চবিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন তিনি। খুব অল্প বয়সেই সংসারের জোয়াল কাঁধে তুলে নেন। শুরু করে বিরিয়ানির দোকান। কিছুদিনের মধ্যে ব্যবসার উন্নতি হয়। দোকান বন্ধক রেখে বাসের ব্যবসায় যুক্ত হয় লালন। সঙ্গে শুরু হয় গ্রামে চড়া সুদের কারবার। উল্লেখ্য, বগটুই গ্রামে এই চড়া সুদের ব্যবসা এখনও রমরমিয়ে চলে। টাকা জমতেই নেমে পড়ে রাজনীতিতে। ২০১৩ সালে এলাকার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী আঙ্গুর শেখের সমর্থক ছিলেন লালন।

শোনা যায়, তাঁকে টাকাপয়সার জোগানও দিতেন লালন। তৃণমূলের প্রার্থী তখন ভাদু শেখের স্ত্রী টেবিলা বিবি। রাজনৈতিক কারণে ভাদুর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় লালনের। জয়ী হন লালন ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস প্রার্থী। জয়ী হতেই লালনের দাপটে তিন বছর গ্রাম ছাড়া থাকে ভাদু শেখ। তিন বছর পার হতেই গ্রামের এক অশান্তিতে ভাদু আর লালন জোট বাঁধে। লালন তৃণমূলের সৈনিক হয়ে ওঠে। লালনের বিরুদ্ধে জমি দখল, তোলাবাজি-সহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাদু শেখ পঞ্চায়েতে জয়ী হয়ে উপপ্রধানের দায়িত্ব পান। ভাদু-লালন দু’জনে হরিহর আত্মা হয়ে ওঠেন। দু’জন দু’জনের ছায়াসঙ্গী হয়ে যান। লালন-ভাদু জুটি নজরে পরে অনুব্রত মণ্ডলের। এহেন লালনের মৃত্যু নিয়ে একাধিক প্রশ্নের ভিড়।

[আরও পড়ুন: দিদিকে নিয়ে দিবাস্বপ্ন! অমর্ত্যের মন্তব্যে কটাক্ষ বিজেপির, বিরোধিতা বাম-কংগ্রেসেরও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার