সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজের তৈরি দানব গিলতে বসেছে পাকিস্তানকে (Pakistan)। ইতিমধ্যেই স্বতন্ত্র সত্ত্বা প্রকাশ করতে শুরু করেছে আফগান তালিবান। এহেন পরিস্থিতিতে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে চার সৈনিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
[আরও পড়ুন: সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাদের গুলি করার হুমকি তালিবানের, ডুরান্ড লাইন মানতে নারাজ জেহাদিরা]
শুক্রবার এক বিবৃতিতে পাক সেনাবাহিনী জানিয়েছে, উত্তর ওয়াজিরিস্তানের মির আলি শহরে জঙ্গি দমন অভিযানের সময় জেহাদিদের সঙ্গে লড়াই বাঁধে নিরাপত্তারক্ষীদের। বেশ কিছুক্ষণ তুমুল গুলির লড়াইয়ে এপর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন চারজন সৈনিক। গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক টিটিপি জঙ্গিকে। ধৃত জঙ্গির কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে, পাক সেনার দাবি উড়িয়ে টিটিপি দাবি করেছে, বুধবার হওয়া ওই সংঘর্ষে সাত পাক সেনাকে খতম করেছে তারা।
বিগত দশক থেকেই পাকিস্তানে সন্ত্রাস তৈরি করেছে টিটিপি। গণতান্ত্রিক সরকারকে উপড়ে ফেলে শরিয়ত লাগু করাই তাদের উদ্দেশ্য। বিগত দিনে বেশ কয়েকবার পাকিস্তানকে রক্তাক্ত করেছে সংগঠনটি। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১৫০ পড়ুয়াকে হত্যা করে জঙ্গি সংগঠনটি। তারপর থেকে পাক সরকার ও টিটিপি’র সংঘাত তুঙ্গে পৌঁছেছে। এহেন পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদ আশা করেছিল যে এবার আফগান তালিবানের মদতে তেহরিকের উপর রাশ টানতে সক্ষম হবে তারা। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দেয় হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদার সংগঠনটি। আফগান তালিবান সাফ জানিয়ে দিয়েছে টিটিপি তাদের সমস্যা নয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গত মাসে টিটিপি-র সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু ইসলামাবাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে টিটিপি স্পষ্ট ভাষায় জানায়, কোনও ধরনের সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণার আগে পাকিস্তানের জেল থেকে তাদের বন্দি সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে। আর এখনই আত্মসমর্পণ করার সময় হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, পাক সেনার হাত রয়েছে টিটিপি-র মাথায়। এই কারণেই নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা চললেও সেনার সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত কোনও নির্ণায়ক ফল পাওয়া যাবে না। আর এই সমস্ত বিষয়গুলিই ভাবিয়ে তুলছে ইমরানকে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে ক্রমশ টিটিপি’র উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে পাক ফৌজ ও আইএসআই।