সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকার বদলায়, তবু শুভ্র তুষার থেকে রক্তের দাগ মোছে না! সোমবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) ডোডা জেলায় জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হয়েছেন ৫ জওয়ান। সাম্প্রতিককালে ভূস্বর্গে একাধিক সেনা অভিযানে, নাশকতার ঘটনায় জঙ্গিদের যেমন মৃত্যু হয়েছে, তেমনই প্রাণ গিয়েছে 'দেশপ্রেমের দিনমজুর' সেনাকর্মীদের। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩২ মাসে শহিদ হয়েছেন ৪৮ জন জওয়ান।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে ২০১৪ সালে। এর পর থেকেই কাশ্মীরে আগ্রাসী নীতি নেয় সেনা। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটেও গেরুয়া শিবিরের দাবি করে, তাদের অন্যতম সাফল্য কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করা। যার ফলে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা খুইয়েছে ভূস্বর্গ। এছাড়াও পুলওয়ামায় হামলায় ৪০ সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর পর পাকিস্তানের বালাকোটে ঢুকে এয়ার স্ট্রাইককেও বারবার সাফল্য হিসেব তুলে ধরা হয়েছে বিজেপি সরকারের তরফে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং একাধিকবার এই সাফল্যের কথা স্মরণ করিয়েছেন দেশবাসীকে। বিগত লোকসভা ভোটেও 'গর্বের' স্মৃতি রোমন্থন করতে ভোলেননি গেরুয়া নেতারা। যদিও এর পরেও কাশ্মীর সীমান্তে পাক অনুপ্রবেশ এবং জঙ্গি তৎপরতা বিন্দুমাত্র কমেনি।
[আরও পড়ুন: শহিদ আরও এক, ডোডায় ৫ জওয়ানের মৃত্যুর দায় নিল কাশ্মীর টাইগার্স]
এমনকী বাড়ন্ত সন্ত্রাসের দিকে তাকিয়ে গত মাসে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তার পরেও অবশ্য বারুদ আর রক্তের গন্ধে ভারী উপত্যকার বাতাস। জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে একাধিক সেনাকর্মীর। গত ৮ জুলাই কাঠুয়াতে সেনার কনভয়ে হামলায় মৃত্যু হয় ৫ জওয়ানের। ১১-১২ জুনের মধ্যে একটি অভিযানে ৬ জওয়ান আহত হন জঙ্গি হামলায়। ৯ জুন জঙ্গি হামলায় খাদে পড়ে যায় পুণ্যার্থী বোঝাই একটি বাস। নিহত হন ৯ জন, আহত হন ৩৩ জন। গত ৪ মে পুঞ্চ জেলায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে শহিদ হন বায়ুসেনার এক জওয়ান।
এছাড়াও ২০২১ এর ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ এর ডিসেম্বরের মধ্যে শহিদ হয়েছেন ২৩ জন সেনা। এছাড়াও এই সময় ৪ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে নাশকতায়। সব মিলিয়ে যেন মৃত্যু উপত্যকা হয়ে উঠেছে কাশ্মীর। এই অবস্থায় বিরোধীদের একাংশের দাবি, সেনার অতি সক্রিয়তা তথা কঠোর নীতির ফলেই উলটো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে ভূস্বর্গে। মাঝে কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম মন্তব্য করেছিলেন, সামরিক বাহিনীর কড়া দমননীতিই কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে।