সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ফের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু রাজ্যে। এবার মৃত্যু হল এক শিশুর। দুর্গাপুরের এক আবাসনের ছাদে খেলতে খেলতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় শিশুটির। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী। দুর্গাপুরের মেয়র দুঃখ প্রকাশ করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
শিশুটির নাম লাভলি শর্মা (৫)। দুর্গাপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিটি সেন্টারের সোনারতরী আবাসনের কে- ব্লকের বাসিন্দা। বর্তমানে আবাসনগুলির দেখভাল করে দুর্গাপুর নগর নিগম। বিদ্যুৎদপ্তর এবং দুর্গাপুর নগর নিগমের গাফিলতির জেরেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয়রা।
[আরও পড়ুন: করোনার মতোই ছোঁয়াচে মাঙ্কিপক্স! ফের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারি করল WHO]
দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে সোনারতরী এলাকায় তৎকালীন বাম সরকারের দেওয়া ‘জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আর্বান রিনিউয়াল মিশন’ (জেএনইউআরএম) এর আবাসনে প্রায় ৪০০ পরিবার বসবাস করে। একাধিক বাড়িতে মাঝেমধ্যে সামান্য বৃষ্টিতেই শর্ট সার্কিট হয় বলে দাবি স্থানীয়দের। বাড়ির ছাদের একাধিক ধাতব পাইপলাইনেও শর্ট সার্কিট হয়ে যায় বলেও অভিযোগ। বিষয়টি দুর্গাপুর নগর নিগম এবং বিদ্যুৎদপ্তরকে জানানো সত্ত্বেও তারা কোনও গুরুত্বই দেয়নি বলে অভিযোগ।
শনিবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ সামান্য বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই সময়ই ছাদে খেলা করছিল লাভলি। খেলতে খেলতে পাইপ লাইনে হাত পরে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অবস্থাতে ছাদেই পড়ে ছিল শিশুটি। মেয়ের খোঁজে মা ছাদে গিয়ে নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করে ওঠেন। তড়িঘড়ি সিটি সেন্টার সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে লাভলিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। স্থানীয় বাসিন্দা মিতা বিবি বলেন, “এই এলাকায় মাঝে মধ্যেই শর্ট সার্কিট হয়ে যায়। দফায়-দফায় বিষয়টি নগর নিগম ও বিদ্যুৎদপ্তরে জানিয়েছি। লাভ হয়নি। এইভাবে মৃত্যুকে হাতে নিয়ে এখানে থাকতে পারব না আমরা। হয় এটা সারিয়ে তুলুক নয়, আমাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাক নিগম।”
[আরও পড়ুন: কমছে ভারতীয়দের প্রজনন ক্ষমতা! ২১০০ সালের মধ্যে ৪১ কোটি কমবে জনসংখ্যা, বলছে রাষ্ট্রসংঘ]
এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা দুর্গাপুরের মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন,” দুঃখজনক ঘটনা। আমাকে আগে জানালে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু আমাদের জানায়নি। আমি এখনই বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটা ঠিক করতে বলছি। ” রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের জেলার রিজিওনাল ম্যানেজার বিশ্বজিৎ বাগদি জানান, “দুর্ঘটনার প্রাথমিক যে কারণ জানা গিয়েছে তা বাড়ির ভেতর শর্ট সার্কিট হওয়ার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। ঘরের ওয়ারিং ঠিক না থাকার ফলেই এই দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। তাও আমরা ভালো করে খতিয়ে দেখছি।”